কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে পিতা ও তার সাত বছর বয়সী শিশু পুত্রের ঝুলন্ত মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
মৃতরা হলেন- কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার ভাড়াটিয়া মধু (৪২) এবং তার একমাত্র ছেলে মুগ্ধ (৭)। মধু শহরের আলফার মোড়ে স্বর্ণকারের কাজ করতেন। মধুর বাবার বাড়ি পশ্চিম মজমপুর গ্রামে।
পুলিশ বলছে ধর্মান্তরিত হওয়ার পর রেজাউল করিম মধু তার এনআইডি কার্ড সংশোধনী নিয়ে বেশ জটিলতায় ভুগছিলেন। যার জন্য সে তার ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারেনি। সেই ােভ থেকেও এই পথ বেছে নিতে পারে। রেজাউল করিম মধু শহরের আলফা মোড় এলাকার বিষ্ণুপদ রায়ের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আট বছর আগে তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আসাদুল মন্ডলের মেয়ে শেফালি খাতুনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তার নাম ছিল মধুসুদন রায়। স্ত্রী অসুস্থ থাকায় বেশকিছু দিন রেজাউল আলফা মোড়ের ভাড়া বাড়িতে অবস্থান করছিল।
পুলিশ ও স্বজনরা জানান, মধু শনিবার বেলা ১২ টার দিকে ছেলে মুগ্ধকে নিয়ে হরেকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সন্তানকে নিয়ে ফিরে না আসায় মা শেফালি পাশেই তাদের ভাড়া বাসায় আসেন। এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে ডাকাডাকি করেন। এরপর কোনো সাড়া না পেয়ে জানালার ছিদ্র দিয়ে দেখতে পায় তাঁর স্বামী ও সন্তান ঘরের মধ্যে একই রশিতে ঝুলে আছে। তাঁর আত্ম চিৎকার প্রতিবেশীরা এসে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের পাঠায়।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ভাড়া বাড়ির আশে পাশে উৎসুক মানুষের ভীড়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্ততি নিচ্ছে। সেখানে একটি অটোরিক্সার মধ্যে রেজাউলের স্ত্রী শেফালী খাতুন জ্ঞান হারিয়েছেন। স্বজনরা তার জ্ঞান ফেরাবার চেষ্টা করছেন।
মধুর স্ত্রী শেফালী খাতুন জানান, সকালে আমার বাবার বাড়ি থেকে ছেলে মুগ্ধকে স্কুলে ভর্তি করার কথা বলে আমার কাছ থেকে নিয়ে আসেন স্বামী রেজাউল। এরপর দুপুরে অনেকবার কল করলেও সে রিসিভ করেনি। পরে বিকালের দিকে বাবার বাড়ি থেকে ভাড়া বাসায় এসে দেখি দরজা জানালা বন্ধ। পরে স্থানীয়রা জানালা ভেঙে দেখে দুজনের মরদেহ ঝুলছে। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা জানি না।
কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ছেলেকে হত্যার পর মধু আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেে পরবর্তীতে সঠিক তথ্য জানানো যাবে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।