বিএনপি’র কর্মীকে হত্যা মামলায় সাবেক এমপি রউফ কারাগারে

0
47

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় এক বিএনপি কর্মীকে হত্যার মামলায় ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃত সাবেক এমপি আব্দুর রউফের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তাকে কুষ্টিয়া সদর আমলী আদালতে হাজির করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেন। আদালতে রউফের আইনজীবী তার জামিন আবেদন জানালে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কুষ্টিয়া সদর কোর্টের জিআরও ইস্কেন্দার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে আব্দুর রউফকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরেরদিন বুধবার সকালে তাকে ঢাকা জেলার গোয়েন্দা শাখার কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রউফ সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সুজন মালিথা (৪৫) নামে এক বিএনপি কর্মীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ঘটনার ৫ বছর পর ২৯ সেপ্টেম্বর দলীয় ভাই পরিচয় দিয়ে সুজন হোসেন নামে এক ব্যক্তি কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাত, মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সাবেক এমপি মাহবুবউল আলম হানিফ ও আওয়ামী লীগের নেতারাসহ ১৫ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০ থেকে ১২ জনকে।

এ মামলায় কুষ্টিয়া ৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক এমপি আব্দুর রউফকে ৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আব্দুর রউফ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক মার্কা প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রামের মৃত হাজী মোকাদ্দেস হোসেনের ছেলে।

আরও পড়ুন – খোকসায় সাবেক মেম্বরের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মানববন্ধন

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়ার নিয়মিত বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে নেতাকর্মীদের উৎসাহ প্রদান করতেন। সেজন্য আসামীরা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি বিএনপির কর্মসূচি শেষ করে রাতে বাড়িতে ফিরে আসার পর রাত ১২ টা ২০ মিনিটের দিকে আসামীরা তাকে জোর পূর্বক বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর রাত দেড়টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানাধীন মোল্লাতেঘরিয়া পূর্ব ক্যানালের পাড়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে। নিহত সুজন সদর থানার টাকিমারা এলাকার ইসমাইল মালিথার ছেলে। এদিকে আসামীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা করতে বাঁধা দেওয়ায় ঘটনার পাঁচ বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী সুজন হোসেন। তিনি কুষ্টিয়া সদর থানার লালন শাহ সড়ক এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই খাইরুজ্জামান জানান, শুনানির জন্য আদেশ পেলে তখন আমরা কোর্টে যায়। তাছাড়া কোন রিমান্ড আবেদনও করা হয়নি।

সাবেক এমপি আব্দুর রউফের স্ত্রী জান্নাতুন নাহার মুঠোফোনে বলেন, আমার স্বামী একজন জনদরদি মানুষ। ঘটনার ৫ বছর পরে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে (স্বামী) ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।