
কুমারখালী প্রতিনিধি
কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কুমারখালী জোনাল অফিসের চাপিয়ে দেওয়া ভূতুড়ে বিলের পরিশোধ করতে গ্রাহক হিমশিম খাচ্ছেন। নানান পন্থায় গ্রহক হয়রানির প্রতিবাদে গ্রাহকরা বিক্ষোভ মিছিল মানববন্ধন ও সভা করেছে।
রবিবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন বিক্ষুব্ধ (নারী-পুরুষ) গ্রাহকরা।
জানাগেছে, বৃহস্পতিবার সকালে অতিরিক্ত বিলের (দ্বিগুণ-তিনগুণ) কারণ জানতে শেখ মহম্মদ সুমন হেলাল উদ্দিন সহ কয়েক জন গ্রাহক পল্লী বিদ্যুতের কুমারখালী জোনাল কার্যালয়ে এসে ডিজিএম’র কাছে অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে গ্রাহকেরাও চড়াও হলে তিনি নমনীয় হন এবং তাদের (গ্রাহক) কথা শোনেন এবং শুধুমাত্র অভিযোগকারী কয়েকজনের বিল সংশোধন করে দিতে প্রস্তাব দেন। কিন্তু গ্রাহকেরা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবনা উপেক্ষা করে রবিবার সকালে স্থানীয় এলঙ্গী-চড়াইকোল মসজিদের মাইকে গ্রাহকদের সমবেত হওয়ার আহবান জানান।
এই আহবানে সাড়া দিয়ে শত শত গ্রাহক বিদ্যুৎ বিলের কপি হাতে নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করেন। এ সময় গ্রাহকেরা পল্লী বিদ্যুতের অনিয়ম দুর্নীতি মানি না, মানবো না ¯েøাগান দেন। এ কর্মসূচির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেন, নিজেরা করি সংগঠনের কর্মীরা।
নিজেরা করি সংগঠনের কর্মী তাসলিমা খাতুন বলেন, আসলেই বিদ্যুৎ বিল কয়েক গুণ বেশি করা হয়েছে। এতে অতিরিক্ত টাকা প্রদান করতে হবে গ্রাহকদের। তারাও এই অনিয়মের প্রতিকার দাবী করেন।
গ্রাহকদের পক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া শেখ মুহাম্মদ সুমন বলেন, গ্রামাঞ্চলের গ্রাহকেরা পল্লী বিদ্যুতের স্থানীয় কর্মকর্তা- কর্মচারীদের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি জনিত ভোগান্তি দীর্ঘদিন ধরে সহ্য করে আসছে। কিন্তু আর নয়। আমরা সাধারণ গ্রাহকেরা প্রতিকার চাই।
হেলাল উদ্দিন জানান, গ্রাহকদের পক্ষে ইউএনও বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তিনি (ইউএনও) আশ্বস্ত করছেন স্বল্প সময়ের মধ্যেই বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সহ অতিরিক্ত বিলের কারণ উদঘাটন করা হবে।
বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশ নেওয়া কয়েকজন নারী (বুলবুলি, রতœা, রোজিনা, কুলসুম, বিলকিস) জানান, প্রতি মাসে আমরা যতটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করি জুলাই মাসেও তা-ই করেছি। কিন্তু জুলাই মাসের বিলে ব্যবহৃত ইউনিট দেখানো হয়েছে কয়েক গুণ বেশি। তাই কয়েক গুণ বেশি টাকা বিল দিতে হচ্ছে। এই বিল সংশোধন সহ আর কখনো এমন কাজ করবে না সেই প্রতিশ্রæতি না দিলে আমরা বিল দেওয়া বন্ধ করে দিবো।
আরও পড়ুন – এ মুহূর্তে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বন্যা মোকাবিলা: ড. ইউনূস
পল্লী বিদ্যুতের কুমারখালী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আনছার উদ্দিন বলেন, আসলে গ্রাহকদের অভিযোগ অনুযায়ী বিল কয়েকগুণ বৃদ্ধি হয়নি। হলেও সামান্য কিছু বেশি হয়েছে। এর কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে আমাদের কর্মীরা সময়মতো বাহিরে যেতে পারেনি। কিছুটা দেরিতে যাওয়ার কারণে ব্যবহৃত ইউনিট বেশি হওয়ায় বিল কিছুটা বেশি হয়েছে। তাছাড়াও কিছু গ্রাহক অটো চার্জ দেওয়ার কারণে বিল বেশি এসেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মিকাইল ইসলাম বিক্ষোভকারী গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের (গ্রাহকদের) অভিযোগ গ্রহণ করছি। আর যে সকল গ্রাহকের অতিরিক্ত বিল এসেছে তাদের একটি তালিকা দিন এবং তালিকার বাহিরের গ্রাহক সহ সকল গ্রাহকের সমস্যা স্বল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে অতিরিক্ত বিলে কারণ অনুসন্ধান ও প্রতিকারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।