রগ কাটা যুবকের মরদেহ ঝুলছিল নিজের ঘরে

0
84

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় নিজের শোবার ঘর থেকে মামুন আলী (২৫) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে। নিহত ওই যুবকের হাতের রগ কাটা ছিল।

শনিবার (২৫ মে) দুপুরের দিকে কুর্শা ইউনিয়নের মজন্দপাড়া গ্রাম থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জের ধরে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে এমন ধারণা করলেও মরদেহ দেখে মুত্যুর কারণ নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশী ও স্বজনরা।

মৃত মামুন মজন্দপাড়া গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কুষ্টিয়ার বিভাগীয় কার্যালয়ে মাষ্টাররোলে চাকুরি করতেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পেপার কাটার উদ্ধার করেছে।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার মাস আগে একই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক লিয়াকত আলীর মেয়ের সাথে মামুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা কারণে স্ত্রীর সাথে তার বনিবনা হচ্ছিল না। এমনকি মাটির ঘরে থাকা নিয়েও স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বাঁধতো। বাধ্য হয়ে পুরাতন বাড়ির জমিতে পাকা ঘর নির্মাণ কাজে হাত দিয়েছিলেন মামুন। পারিবারিক কলহের জেরে বিয়ের পর থেকে স্ত্রী তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন। প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালেও ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে ঘরে যায় মামুন। সকাল সাড়ে ৮টা বেজে গেলেও ঘর থেকে বের না হলে তার মা ডাকতে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ দেখতে পান। এ সময় দরজায় ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে আড়ার সঙ্গে গলায় গামছা দিয়ে ছেলের ফাঁস নেওয়া ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান তিনি। এ সময় তার চিৎকারে স্বজনেরা ছুটে এসে গামছা কেটে মরদেহ নামিয়ে পুলিশকে খবর দেওয়। এছাড়া মামুনের বাম হাতের রগ কাটা ও ঘরের মেঝের এক পাশে রক্ত দেখতে পান তারা। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর বেলা দুইটার দিকে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর তাঁর লাশ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

নিহতের চাচাতো ভাই বোরহান উদ্দিন জানান, মরদেহ নামানোর সময় মামুনের বাম হাতের রগ কাটা দেখতে পেয়েছি। এছাড়া গলায় জড়ানো গামছা বা হাতের নিচের মেঝেতে কোন রক্ত দেখতে পাইনি। রক্তের দাগ ছিল ঘরের এক পাশে। ফাঁস নেওয়া ঘরের আড়া ও মেঝের উচ্চতা এবং গামছায় রক্তের কোন দাগ না দেখে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর সাথে ভাইয়ের পারিবারিক কলহ ছিল। মৃত্যুর খবর জানার পর স্ত্রী একবার দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসী উত্তপ্ত হয়ে গেলে চলে যান।

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা হাবিবুল্লাহ জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই যুবকের বাম হাতের কব্জিতে জখম ছিল। এছাড়া ঘর থেকে একটা কাগজ কাটারও উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক অশান্তির কারণে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।