লোকচক্ষুর অন্তরালে রুমা বেগমের ২৫ বছর

0
190

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

মুখে তার লম্বা কাঁচা পাকা দাড়ি। নারী পোষাকে আবৃত্ত দেহ। প্রথম দেখায় যে কেউ হতমম্ব হয়ে যেতে পারেন। তাই নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে ২৫ বছর লুকিয়ে রেখেছেন তিনি। এ নারীর বয়স ৬৪ বছর।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালা লপিুর গ্রামের হবিবর জমাদ্দারের মেয়ে তিনি। বর্তমান শহরের পবহাটী গ্রামের একটি পোল্ট্রি খামারে কাজ করেন।

রুমা বেগম জানান, ১৯৯৬ সালে পেটে টিউমার হয়। টিউমার অপারেশনের পর তার শারীরিক পরিবর্তন হতে থাকে। হাসপাতাল থেকে ফেরার কিছুদিন পর মুখে দাড়ি গজাতে শুরু করে। সেই থেকে তিনি লোকচুর অড়ালে চলে যান। সব সময় মুখমন্ডল ঢেকে চলাফেরা করতেন। কিন্তু সম্প্রতি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ন। এখন আর মুখ ঢেকে রাখতে পারেন না।

বৃদ্ধা রুমা বেগম জানান, ১৯৭১ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তার বিয়ে হয়। ১০ বছর পর স্বামী মারা যান। প্রথম স্বামীর ঘরে কোন সন্তান ছিল না। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে হয় মাগুরায়। সে স্বামীও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। পরিবার থেকে আবারও সদর উপজেলার বিষয়খালী গ্রামে বিয়ে দেন। কিন্তু সতিনের সংসার বলে তিনি আর তৃতীয় স্বামীর বাড়ি যাননি।

তিনি জানান, এক রাতে তিনি নিজের মুখমন্ডলে দাড়ি গজানোর স্বপ্ন দেখেন। সকালে মুখে হাত দিয়ে দেখেন মুখভর্তি দাড়ি গজিয়েছে। দাড়ি ওঠার পর তিনি খুব কান্নাকাটি করেছেন।

প্রতিবেশি বিল্লাল হোসেন জানান, রুমা বেগম এলাকার নারীদের কোরআন ও নামাজ শিা দেন। নারীদের বিভিন্ন প্রয়োজনে সহযোগিতা করেন। জীবনের শেষ বেলায় এসে তিনি শহরের পবহাটী গ্রামে একটি পল্ট্রি খামারে কাজ করছেন। অবসর সময়ে কাঁথা সেলাই করেন।

যশোর আদদ্বীন হাসপাতালের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ হাসানুজ্জামান বলেন, হরমন জনিত কারণে তার মুখে দাড়ি গজিয়েছে। হতে পারে রুমা বেগমের পেটে যে টিউমারটি ছিল সেটা হরমন নিঃশ^রণ টিউমার। তিনি বলেন, দেহে পুরুষ হরমনের আধিক্য থাকার কারণে রুমা বেগমের মুখে দাড়ি গজাতে পারে। তবে এেেত্র পরীা নিরীা করে সঠিক কারণ নির্নয় করা যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন।