শোমসপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান গেটে তালা ঝুলছে

0
130

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসার শোমসপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে সহকারী শিক্ষকদের দ্ব›েদ্ব র জের ধরে বিদ্যালয়টির প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে এক শিক্ষক। গত তিন ধরে বিদ্যালয়ের অফিস চলছে পেছনের গেট দিয়ে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ পত্র নিতে ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ ছাত্র অভিভাবক ও সাধারণ শিক্ষকরা।

প্রতিবছর বিদ্যালয়ে একই প্রকাশনার গাইড বই ধরানো হয়। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রশিদে দফাই দফাই ফিস আদায়সহ নানা অনিয়ম দুনীতির ঘটনায় প্রধান শিক্ষিকা আইভিন আরা’র সাথে বিদ্যালয়ের একাধিক সহকারী শিক্ষকর বিরোধ দীর্ঘ দিনের। চলতি শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়টিতে আবার একই প্রকাশনার গাইড বই ধরানো কেন্দ্র করে রবিবার (২৩ মার্চ) শিক্ষকদের মধ্যে মতোবিরোধ হয়। এ ঘটনার সূত্রধরে এ দিন বেলা ২টার দিকে বিদ্যালয়টির প্রধান গেটে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষকরা। সেই থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান গেট বন্ধ। অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা হঠাৎ করে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ পত্র সরবরাহের জন্য বিদ্যালয়ের পেছনের দিকে প্রধান শিক্ষকের বাড়ির আঙ্গিনার একটি ছোট গেট খুলে বিদ্যালয়ের নিত্য দিনের অফিসিয়াল কাজ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবক ও সাধারণ শিক্ষক এবং স্থানীয় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন।

শিক্ষক হাবিবুর রহমান স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার দায় স্বীকার করে বলেন, তিনি প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষ, বিদ্যালয়ের অফিস ও প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের যাবতীয় কর্মকান্ড স্থবির করে দেওয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে শোমসপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান গেটে তিন তিনটি তালা ঝুলছে। বিদ্যালয়ের ভিতরে সুনসান নিরবতা। বিদ্যালয়ের পেছনেই প্রধান শিক্ষকের বাড়ি। বাড়িতেই পাওয়া গেলে প্রধান শিক্ষকা আইভিন আরাকে। তিনি বিদ্যালয়ের সাভাবিক কাজ কর্ম চলছে বলেই দাবি করেন। তিনি তার বাড়ির আঙ্গিনায় বিদ্যালয়ের গেট খুলে অফিসয়ালরা কাজ করছে বলেও দাবি করেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান গেটে ফিরে এসে দেখা হয়ে যায় দুইজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর সাথে। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মঙ্গলবারও তারা দুইজনে প্রবেশ পত্র নিতে এসে ছিল। কিন্তু প্রধান গেটে তালা দেওয়া দেখে ফিরে গেছেন। আজ এসেছে। এখনো স্কুলের অফিস পর্যন্ত পৌচ্ছাতে পারেনি।

বিদ্যালয়টির সাবেক সভপতির ছেলে মনিরুজ্জামান কাকন বলেন, বিদ্যালয়ের গেটে তালা মারা খুবই অন্যায় হয়েছে। সমস্যা সমাধানের বিকল্প পদ্ধতি আছে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বর্তমান সভাপতির ভাই হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে মোটা টাকার বিনিময়ে একই প্রকাশনার গাইড বই কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করছেন। প্রধান শিক্ষিকার কারণে একাধিক শিক্ষক কর্মচারীর বেতন বন্ধ রয়েছে। প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মের প্রতিবাদে শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রধান শিক্ষিকা আইভিন আরা জানান, যে শিক্ষক বিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়েছে তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে। তবে তিনি বিষয়টি স্থানীয় ভাবে সমাধানের চেষ্টা করছেন। তিনি তার বাড়ির আঙ্গিনার গেট দেখিয়ে বলেন এই গেট দিয়ে গিয়ে অফিসিয়াল কাজ করা হচ্ছে। নিজের বাড়ি থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে গিয়ে আজ মাহান স্বাধীনতা দিবসে উপজেলা প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন বলেও তিনি দাবি করেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোস্তাফিজুর রহমান এর সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, গতকাল সভাপতি তালা খুলে দিতে চেয়েছিলেন। আগামী কাল তারা ব্যবস্থা নেবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদিপ্ত রায় দ্বিপন বলেন, আগামী কাল ২৭ মার্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ব্যবস্থা নেবেন। যদি উনি ব্যর্থ হন তবে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

আরও পড়ুন – খোকসায় রিভালবার ও দেশী অস্ত্রসহ বিএনপি নেতা আটক

বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বিদ্যালয়ের গেটে তালা দেওয়ার সাথে জড়িত শিক্ষকের ভাই শরিফ মুহম্মদ রাশেদ এর সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেনি।