এনায়েতপুরে থানায় ঢুকে ১৩ পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা

0
56

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা থানায় হামলা করে ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। রবিবার বিকালে থানা ঘেরাও করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

থানার সামনে ও ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে নিহতদের মরদেহ। রবিবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় সেখানে পড়ে থাকা মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়নি। জেলা সদর থেকে পুলিশ এনে মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ সুপার অফিস সূত্রে জানা গেছে। নিহতদের নাম, পরিচয় বা পদবী শনাক্ত হয়নি। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন।

পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অপারেশনস অ্যান্ড ক্রাইম) বিজয় বসাক ১১ মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়ে বলেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য সদস্যরাও তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন। তারা থানায় গিয়ে ১১টি মরদেহ পেয়েছেন। এর মধ্যে আটটি মরদেহ মসজিদের পাশে স্তুপ করা অবস্থায় পাওয়া গেছে। তিনটি মরদেহ পাওয়া গেছে পুকুরে। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য এখনও নিখোঁজ বলে তিনি জানান।

এনায়েতপুর হাট কমিটির সহ-সভাপতি মোকতার হোসেন বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে তিন থেকে চার হাজার আন্দোলনকারী ও বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী থানা ঘেরাওয়ের পর ভাঙচুর শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ ছাদে উঠে আত্মরক্ষায় রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও গুলি ছুড়লে অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়। পরে তারা থানার ভেতরে ঢুকে পুলিশ সদসদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পুলিশ সদসদের বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আহত অবস্থায় একে একে সবাই থানা চত্বরে বিনা চিকিৎসায় মারা যান।

আরও পড়ুন – এমপি হানিফের কুষ্টিয়ার বাড়িতে হামলা ভাঙচুর

এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সৌদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাশেদুল হাসান সিরাজ বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা এ মুহূর্তে নেই। দ্রæত মরদেহগুলো উদ্ধার করা দরকার। নতুবা রাতের অন্ধকারে আন্দোলনকারীরা সেগুলো গুম করতে পারে। যতদূর জেনেছি, থানায় ৩৬ জন পুলিশ সদস্য ছিলেন। হয়তো আশেপাশে আরও কয়েকজন আহত অবস্থায় পালিয়ে বা ভেতরেও থাকতে পারেন। তাদেরও খুঁজে বের করা উচিত। ’

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, এনায়েতপুর থানার ঘটনাটি মর্মান্তিক। আন্দোলনকারীদের মারধরে নিহত পুলিশ সদস্যদের নাম-পরিচয় ও পদবী শনাক্ত এবং মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া বলেন, প্রথমে হাজারখানেক মানুষ দলবেঁধে থানার দিকে আসে। সেখানে তারা কিছুক্ষণ অবস্থান করে চলে যায়। পরে কয়েক শ মানুষ থানায় এসে হামলা চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এখন পর্যন্ত ১১-১২ জন পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।