স্টাফ রিপোর্টার
সিরাজপুর হাওড় নদীতে ছেড়ে দেওয়া হাঁসের মধ্য ৪ টি হাঁস আটকা পরে নদীর ওপারের এক বাড়িতে। সেখান থেকে হাঁস ফিরে পেতে ব্যর্থ হয়ে নিজের বাড়িতে বিলাপ করছিলেন আনসার ভিডিপি সদস্য শরিফা খাতুন (৩৫)। এমন সময় প্রতিপক্ষ তাকে বাড়ি থেকে তুলে রাস্তায় নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
কুষ্টিয়ার খোকসার জানিপুর ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামে শুক্রবার দিনগত রাত ১০টার দিকে নিজের বাড়িতে হামলার শিকার হন আনসার ভিডিপি সদস্য শরিফা খাতুন। তিনি স্বামী পরিতক্তা। তার বাবার নাম শুকুর মোল্লা। ঘটনার রাতে প্রতিবেশীরা আহত শরিফাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। একই ঘটনায় প্রতিপক্ষের আমেনা খাতুন (৪৮) আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ঘটনা স্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে , শুক্রবার বিকালে বাড়ির পাশের হাওড় নদীতে ছেড়ে দেওয়া শরিফা খাতুনের ৮টি হাঁসের মধ্যে ৪ টি হাঁস বাড়ি ফিরে আসে। তিনি বাঁকী হাঁসের সন্ধানে বেড় হন। রাতে নদীর ওপারের একতারপুর গ্রামে মৃত সামসের আলীর স্ত্রী আমেনা খাতুনের ঘরে হারিয়ে যাওয়া হাঁসের সন্ধ্যান পান। হাঁস উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে নিজের বাড়ি ফিরে শরিফা বিলাপ করছিলেন। এমন সময় আমেনা খাতুনের লোকেরা আনসার ভিডিপি সদস্য শরিফা খাতুনের বাড়ি থেকে ধরে রাস্তায় নিয়ে গিয়ে বেধরক মারপিট করে। এক পর্যায়ে আহত শরিফা হামলাকারিদের কাছ থেকে ছুটে গিয়ে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
প্রতিপক্ষের হামলায় আহত শরিফা হামলার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, রাতে নদী সাতরে বাড়ি ফিরে ভেজা পোশাকে হাঁসের জন্য বিলাপ করছিলেন। এ সময় ৪জন মহিলাসহ ১০/১৫ জন ছেলে মানুষ তার বাড়িতেহামলা করে। তাকে টেনেহিঁচরে রাস্তায় নিয়ে যায়। জিগা গাছের কাঁচা ডাল দিয়ে প্রায় আধাঘন্টা ধরে মারপিট করে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিরব দর্শকের মত দেখেছেন। হামলা কারীদের ভয়ে কেউ তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেন নি। পরে হামলাকারিদের হাত থেকে ছুটে প্রতিবেশী বাবলুর ঘরে গিয়ে পালান। সেখান থেকে তাকে ধরে আনার চেষ্টা করে হামলা কারীরা। রাতে ওই প্রতিবেশী তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে আসেন। ডাক্তার তাকে ভর্তি করে রাখেন। তিনি মামলা করেনি। তবে পুলিশকে জানিয়েছেন।
আনসার ভিডিপি সদস্য শরিফা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরপরই হাসপাতালে ভর্তি হন প্রতিপক্ষের বৃদ্ধা আমেনা খাতুন (৪৮)। শনিবার দুপুরে তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি হাসপাতল থেকে আত্মগোপন করেন।
আমেনা খাতুনের পরিবারের লোকদের পাওয়া যায়নি। তবে শরিফার উপর হামলার ঘটনায় আটক আনোয়ার স্ত্রী লাকী খাতুন দাবি করেন, তার স্বামীকে বিনা কারণে পুলিশ নিয়ে গেছে। তার দোকান ও বাড়ি থেকে হামলার স্থান প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার বলেও তিনি দাবি করেন।
জানিপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর নিবির সরকার আনসার ভিডিপি নারী সদস্য শরিফার উপর হামলার কথা শোনেন নি। তবে তিনি শুনেছেন আনোয়ার নামের একজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। কিন্তু কি কারণে ধরে নিয়ে গেছে। সে বিষয়ে তিনি জানেন না।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।