হরিণাকুন্ডুর পায়রাডাঙ্গা গ্রামে ৩ হাজার বিঘা জমি পানির নিচে

0
32
jhenaidah-dro-7-p-9
দুলু মন্ডল এবং ডালিম মন্ডল

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের ৩ হাজার বিঘা জমি পানির নিচে তরিয়ে আছে।এক সময়ের ধানী জমিতে এখন পানিতে থৈ থৈ করছে।

মুক্তার হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী কৃষক বলেন, তার ২৬ কাঠা জমি ছিল। এই জমিই ছিল তার একমাত্র সম্বল। এ জমির ধান দিয়ে চলতো তার সারা বছরের খাবার। কিন্তু এলাকাতে প্রভাবশালীর ক্ষমতার জোরে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে। যার কারনে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে স্বপ্নভঙ্গ হচ্ছে এ এলাকার প্রায় দেড় হাজার কৃষক পরিবারের

অবৈধভাবে পুকুর কাটার ফলে তিন হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী কৃষক পরিবারগুলো এর প্রতিকার চেয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও তড়িৎ কোন পদক্ষেপ পায়নি তারা।

পায়রাডাঙ্গা গ্রামের আক্তারুজ্জামান বলেন, তাদের গ্রামে ৮/১০ বিল রয়েছে। দুই মৌসুমে এই বিলে বিপুল পরিমাণ ধান উৎপন্ন হতো। কিন্তু পায়রাডাঙ্গা গ্রামের আইয়ূব মন্ডলের ছেলে ডালিম মন্ডল ও জব্বার মন্ডলের ছেলে দেলোয়ার হোসেন দলু মন্ডল যত্রতত্র পুকুর কটছে। ফলে গোটা বিলে জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে।

গ্রামবাসির ভাষ্যমতে পায়রাডাঙ্গা গ্রামের হাতিশুড়ো, মুচেইখালী, ট্যাবার মাঠ ও সঞ্জেরখালী মাঠ এখন পানির নিচে। সঞ্জেরখালী মাঠে সরকারী জমি ছিল দেড় বিঘা। সেখানে বিল ও খালের সংযোগ স্থানে ছিল একটি ব্রীজ। পুকুর কাটায় ব্রীজের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারী রাস্তায় কেও চলাচল করতে পারছে না। সরকারী ভাবে নির্মিত যাত্রী ছাউনিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

আরও পড়ুন- ফরিদপুরে ছুরিকাঘাতে একযুবককে হত্যা

সরকারী জমি দখল, সরকারী রাস্তা ও ব্রীজ বন্ধ, সরকারী যাত্রী ছাউনি পরিত্যক্ত ও সরকারী খাল নষ্ট করার পরও কেন ঝিনাইদহের প্রশাসন দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না এ নিয়ে গ্রামবাসি প্রশ্ন তুলেছে। তাদের ভাষ্য বেআইনী ভাবে জমির শ্রেনী পরিবর্ত করে ডালিম ও দলু আইন ভঙ্গ করেছেন। সেই সাথে তারা হাজারো মানুষের পেটে লাথি মারতে বিলের মধ্যে পুকুর কেটে চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন। এরপরও যদি তাদের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ না হয় তবে পায়ারাডাঙ্গা-ভালকী গ্রামে এই পুকুর কাটা নিয়ে দাঙ্গা ফ্যাসাদ শুরু হতে পারে বলে গ্রামবাসি আশংকা প্রকাশ করছেন।

পুকুর মালিক ডালিম ও দলু বলেন, তারা তাদের জমিতে পুকুর কাটছেন। পুকুর কাটার কারণে কোন কৃষকের ক্ষতি হলে তারা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিবেন।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নাফিজ সুলতানা বলেন, আমি অসুস্থ থাকার কারণে অভিযোগটি পায়নি। তবে জেলা প্রশাসন থেকে আমাকে অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলেছেন। আমি সরেজমিন তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তার সাথে যোগাযোগ করারও পরামর্শ দেন।