এক কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী, অন্য কেন্দ্রে পরীক্ষা দিলো

0
80
প্রতিকী ছবি

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসায় এইচএসসি পরীক্ষার ৩য় দিন এক কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী আর এক কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর জানা গেলো সে ভুল কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষায় খোকসা সরকারি ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ছাত্রীর শোমসপুর আবুতালেব ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন প্রতিবেদন দিতে বলেছে ট্যাগ অফিসারকে।

শিউলি নামের ওই পরীক্ষার্থী ধোকড়াকোল ডিগ্রী কলেজর ২০২২-২৩ শিক্ষা বর্ষের ছাত্রী। গতবছর ইংরেজি বিষয়ে সে অকৃতকার্য হয়। ক্যাজুয়াল পরীক্ষার্থী হিসেবে চলতি ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, চলতি এইচএসসি পরীক্ষষার তৃতীয় দিন ইংরেজি পরীক্ষায় খোকসা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রের ২০৪ নম্বর কক্ষে শিউলি খাতুন নামের ওই পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরে যায়। সিটপ্লান ও হাজিরা অনুযায়ী এ কেন্দ্রে ৩৫৬ জন পরীক্ষার্থী হওয়ার কথা থাকলেও খাতা হয়ে যায় ৩৫৭টি। টনক নড়ে কলেজ প্রশাসনের। কয়েক ঘন্টা চেষ্টার পর তারা উদ্ধার করে ২০৪ নম্বর কক্ষে শিউলি খাতুন নামের একজন অতিরিক্ত ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছে। সে শোমসপুর আবু তালেব ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী।

সুত্রটি আরও জানায়, এর পর ওই পরীক্ষার্থী খাতা ও হাজিরা সিট নিয়ে দুই কেন্দ্রের মধ্যে টনা পড়ন শুরু হয়। শোমসপুর আবু তালেব ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেয় তারা ওই পরীক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখিয়েছে। অবশেষে অত্যন্ত গোপনিয়তার সাথে লোকমারফত যশোর শিক্ষা বোর্ডে ওই অতিরিক্ত খাতাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

খোকসা সরকারি ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহনের দায়িত্বে থাকা প্রভাষক চন্দন কুমার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে খাতা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ছাত্রী ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।

পরীক্ষার্থী শিউলির সাথে কথা বলতে শুক্রবার দুপুরে তার বাবা আকবর আলীর বাড়ি উপজেলার উথলি গ্রামে যাওয়া হয়। সে সেখানে নেই। তার মা মমতাজ খাতুন জানান, মেয়ে পরীক্ষার আগের রাতে কাদিরপুরে জামাই বাড়ি গেছে। সেখান থেকে পরীক্ষা দেওয়ার কথা। শুনেছেন পরীক্ষা দিয়েছে।

মুঠো ফোনে শিউলির সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। ফোনটি ধরে তার স্বামী শুভ। তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান।

শোমসপুর আবুতালেব ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ রায়হানুল হক সুলতান বলেন, ওই কেন্দ্রে কাছে ওই ছাত্রীর রোল সিট, হাজিরা সিটসহ কোন কাগজ পত্র নাই কিন্তু কি করে তার পরীক্ষা নেওয়া হলো। এ ছাড়া ওই ছাত্রী যে কলেজের, সে কলেজের কেন্দ্র আমার কলেজে। এক কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর কোন কাগজ অনলাইন থেকে বেড় করার অধিকার অন্য প্রতিষ্ঠানের নেই। তারা সে কাজটিও করে খাতা নিয়ে এসেছিল। আমরা তা গ্রহণ করিনি। তবে ছাত্রী চাইলে আগামী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ট্যাগ অফিসারকে প্রতিবেদন দাখিলেন জন্য বলা হয়েছে বলে শুনেছেন।

খোকসা সরকারি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ প্রফেসার আব্দুল লতিপ মুঠো ফোনে জানান, বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ওই ছাত্রী পাশও করবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজের সভাপতি ইরুফা সুলতানা বলেন, কক্ষ পরিদর্শকের ভুলে এমন ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ পর্যায়কে অবহৃত করা হয়েছে। ছাত্রীর রেজাল্ট নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা না। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রের ট্যাগ অফিসারকে এ নিয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া তার কাছে অধ্যক্ষ প্রতিবেদন পাঠাবেন।