কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ নির্মাণ প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত শুরু

0
184
আইএমইডি প্রধান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্তকারী দল

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সীমাহীন অনিময় দুনীতি সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত, স্বাস্থ্য ও সংস্থাপন বিভাগের অব্যবস্থাপনা ও অস্বচ্ছতা তদন্তে কাজ শুরু করেছেন সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প ‘বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ’ (আইএমইডি)।

রবিবার দুপুরের পর থেকে আইএমইডি প্রধান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্তকারী দল তদন্তের কাজ শুরু করেন।

তদন্তকারী দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ণ ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ) সাইফুর রহমান, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক মতিয়ার রহমান, গণপূর্ত বিভাগের যুগ্ম সচিব শওকত আলী এবং পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুর রউফ।

তদন্তকারী দল সরেজমিন নির্মাণাধীন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্প সাইট পরিদর্শন করেন। পরে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকল দাপ্তরিক নথিপত্র তলব করে তা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় সেখানে প্রকল্প শুরুর পর থেকে রবিবার পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকারী প্রকল্প পরিচালকগণ, সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীগণকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী দল।

এ সময় তদন্তকারী দল ও আইএমইডি প্রধান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীর কাছে তদন্ত বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে তদন্তাধীন বিষয়ে বিশদ কিছু বলার সুযোগ নেই। তবে এটুকু বলি- আমরা প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সার্বিক বিষয়গুলি বিবেচনায় নিয়ে খতিয়ে দেখছি।

প্রসঙ্গত, নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘায়িত নির্মাণাধীন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্পের নির্মাণকাল সম্প্রসারণসহ আনুষঙ্গিক চাহিদা পূরণকল্পে উন্নয়ন প্রস্তাবনা অনুমোদন চেয়ে একনেক সভায় উপস্থাপন করেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। গত ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত একনেক সভার সভাপতি প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে উন্নয়ন প্রস্তাবনার ফাইল ফেরত পাঠান এবং ওই দিনই নির্মানাধীণ এই প্রকল্পটি তদন্তের নির্দেশ দেন আইএমইডিকে।

নির্ধারিত নির্মাণকালের প্রায় তিনগুন সময় অতিবাহিত এবং সরকারী অর্থ ব্যয়সহ অপচয়ের কারণে ঝুলে থাকা নির্মানাধীন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন সচেতন নাগরিক কমিটি সনাক’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম টুকু।

জানা গছে, ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ২০১১ সালে মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট টেনিং ইনস্টিটিউট (ম্যাটস) ভবনে অস্থায়ীভাবে যাত্রা শুরু হয় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের। ২০১৩ সালে শহরের শহরতলীর লাহেনী এলাকায় ২০ একর জায়গার ওপর ২৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে নির্মাণ শুরু হয় স্বপ্নের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা থাকলে কাজ শেষ হয়নি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সীমাহীন অনিয়ম দুর্ণীতি, সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত, স্বাস্থ্য ও সংস্থাপন বিভাগের অব্যবস্থাপনা ও অস্বচ্ছতার সাথে যুক্ত স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে নির্মানাধীন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্পটি।

চলমান তদন্তের বিষয়ে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, দেখুন নির্মানাধীণ কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্পটি ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বলতে পারেন আমি নিজেই আজ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছি। ফলে তদন্তাধীন এ বিষয়ে কোন কিছুই বলার কোন এখতিয়ার আমার নেই।