কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবি আদায়ে ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে কুষ্টিয়া শহর। বিক্ষোভকারীরা জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে চেয়ার ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া ট্রাফিক অফিস, জেলা পরিষদের নবনির্মিত মার্কেট, পাঁচ রাস্তার মোড়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর মুরাল ভাঙচুর ও মহাসড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছে আন্দোলনকারীরা। এছাড়া পুলিশের ছোড়া গুলিতে পাঁচ সাংবাদিকসহ অন্তত শতাধিক আহত হয়েছেন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার জানান, বিকাল ৪ টা পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের অধিকাংশের শরীরে রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছে। আহতদের ৪-৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন – সাধারণ ছুটি থাকছে তিনদিন
রবিবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের চৌড়হাস এলাকায় জড়ো হতে থাকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ, রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শহরের একাধিক স্থানে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলছিল। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের মজমপুর গেটের দিকে আসতে থাকে আন্দোলনকারীরা। সেখানে ট্রাফিক অফিসে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। পাঁচ রাস্তার মোড়ে এসে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধুর মুরাল ভাঙচুর করে শহর এন এস রোডে ঢুকে পড়ে। একপর্যায়ে হাজার হাজার মানুষ মিছিলে যোগ দেয়। সেখান থেকে বিক্ষোভকারীরা নব নির্মিত জেলা পরিষদ মার্কেট ভাঙচুর চালিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দিকে এগিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে পালিয়ে যায় অবস্থানরত নেতা-কর্মীরা। সেখানে বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের গøাস ও চত্বরে থাকা চেয়ার ভাঙচুর চালাতে থাকে। পরে কার্যালয় চত্বরে রাখা শতাধিক চেয়ারে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এরপর বিক্ষোভকারীরা থানার দিকে চলে যায়। থানার সামনে পৌছালে সেখানে শ্লোগান দিয়ে ইট-পাটকেল ছোড়ে আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। সেখান থেকে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় দৈনিক শিকলের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের স্টাফ রির্পোটার শরীফ বিশ্বাস, একাত্তর টিভির শাহীন আলী ও তাদের ক্যামেরা পারসন কোহিনূর, গেøাবাল টিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সনি আজিম গুলিবিদ্ধসহ আহত হন। আন্দোলনকারীরা জিলা স্কুলের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর আন্দোলনকারীরা ভাগ হয়ে শহর ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নেই। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শহরের ৬ রাস্তার মোড়, এনএস রোডস্থ ইসলামিয়া কলেজের সামনেসহ শহরের একাধিক স্থানে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছিল।