খোকসায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

0
121
অভিযুক্ত লুবনা রেজা

জাল শিক্ষাসনদ দিয়ে সরকারী প্রকল্পে চাকুরির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসায় শিক্ষাসনদ জালিয়াতি করে মহিলা অধিদপ্তরের আইজিএ প্রকল্পের প্রশিক্ষক পদে চাকুরি নেওয়া নারীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকতার দপ্তরে আইজিএ প্রকল্পে বিউটিফিকেশেন প্রশিক্ষক পদে নিয়োগের সময় শিক্ষাসনদ জাল করে এবং নিজের নাম পরিচয় গোপন করে রুপালী খাতুন লুবনা নাম দেখিয়ে চাকুরি নেন মোছাঃ লুবনা রেজা। ঘটনাটি ধামা চাপা দিয়ে টানা ৫ বছর ধরে প্রকল্পে কর্মরত থেকে সরকারী কোষাগার বেতন ভাতা ও প্রশিক্ষনের প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করেন তিনি।

সম্প্রতি মোছাঃ লুবনা রেজার শিক্ষাসনদ জালিয়াতি করে চাকুরি নেওয়ার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। ওই শিক্ষাসনদের প্রকৃত অধিকারী রুপালী খাতুনের স্বামী এনামুল কবির বেঁকে বসেন। তিনি সাটিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। ইতোমধ্যে সনদ জালিয়াতির বিষয়ে শুনানিও হয়েছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, মহিলা অধিদপ্তরের আইজিএ প্রকল্পে বিউটিফিকেশন প্রশিক্ষক পদে ২০১৮ সালে একজন প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এর সুযোগে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তারা কমলাপুর গ্রামের মহঃ সুজন রেজার স্ত্রী লুবনা রেজাসহ তিন জনের নাম প্রকল্প পরিচালকের দপ্তরের নামের প্রস্তাব পাঠান। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক পাশের শিক্ষা সনদ প্রয়োজন হওয়ায় বাধে বিপত্তি। এক পর্যায়ে সুজনের বাল্যবন্ধু এনামুল কবীরের স্ত্রী রুপালী খাতুনের উচ্চ মাধ্যমিক পাশের সনদ দাখিল করে মোছাঃ লুবনা রেজা হয়ে যায় রুপালী খাতুন লুবনা। দপ্তরে তিনি নিজের নাম ছাপিয়ে রুপা ম্যাডাম নামেও পরিচিত সৃষ্টি করেন।

অভিযোগকারী এনামুল কবীর বলেন, তার স্ত্রী রুপালী খাতুনকে ভুল-ভাল বুঝিয়ে বন্ধুর স্ত্রী মোছাঃ লুবনা রেজা তার সমস্ত শিক্ষা সনদ নিয়ে যায়। সেই সাটিফিকেট ব্যবহার করে লুবনা রেজা রুপালী খাতুন লুবনা হয়ে যায়। অন্যের সনদ দিয়ে ৫ বছর প্রকল্পে চাকরি করার পর অভিযোগের ভিত্তিতে ৩০ মাচ সে স্বোচ্ছায় চাকুরী থেকে অব্যহতি দিয়েছেন। এখন প্রকল্প থেকে বকেয়া পাওনা বেতন ভাতা উত্তলনে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তার সহযোগীতা করছেন। তদন্তের দিন ওই কর্মকর্তা অভিযোগকারীকে ভয় দেখিয়েছেন বলে তিনি জানান।

লুবনা রেজার সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলা হলে তিনি জানান, তদন্ত কর্মকর্তারা তাকে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে বারুন করেছেন। তারা ছাড়া অভিযোগ কারী তার স্বামীর বন্ধু ও ব্যবসায়ীক পাটনার। অভিযোগ কারী এনামূল তার স্বামীর ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে বলেও তিনি দাবি করেন।

দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা মাহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফেরদৌস নাজনীন বলেন, ঈদের আগেই তারা তদন্ত শুরু করেছেন। নিয়োগের প্যানেল পাঠানোর সময় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। তখন কাগজপত্র ঠিক থাকলেও এখন বুঝতে পারছেন কিছু একটা সমস্যা থাকতে পারে। তবে তদন্ত শেষ না করে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত করে প্রকল্প পরিচালকের বরাবর নথি পাঠানো হবে।

তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্পের ট্রেনিং শেষ হয়ে গেছে। আগামী জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার বিশ্বাস বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তদন্ত শুরু করেছেন। গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের জন্য ওই কর্মকর্তাকে আবারো বলবেন বলে জানান।