যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় পূজা করতে পরছে না আদিবাসীরা
স্টাফ রিপোর্টার
কুষ্টিয়াার খোকসায় ৬২টি মন্ডপে সার্বজনীন দূূর্গা পূজার চুড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। মন্ডপের যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় হিলালপুর আদিবাসী পল্লীতে এবছর দূর্গা পূজা হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক পূজা মন্ডপ কমিটি তাদের আয়োজন কিছুটা খাটো করেছেন।
পূজা উৎযাাপন পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, এ বছর শারদীয় দূর্গা উৎসবের কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর উপজেলায় ৬৪ টি মন্ডপে দূর্গা পূজা হয়েছিল। এবছর হিলালপুর আদিবাসী পল্লী ও শিমুলিয়া আদিবাসী পল্লীর বারোয়ারি পূজা হচ্ছে না। এবারে কমলাপুর ঋষিপাড়া আদিবাসী পল্লী ও জয়ন্তী হাজরা গ্রমে দুটি নতুন মন্ডপে দূূর্গা পূজার আয়োজন চলছে। নতুন পুরাতন মিলিয়ে ৬২টি মন্ডপে প্রতিমা ও প্যান্ডেল তৈরীর কাজ চুড়ান্ত পর্যায়ে চলছে।
বিগত দুই বছর হিলালপুর আদিবাসী পল্লীতে বারোয়ারি দূর্গা পূজা করা হয়। কিন্তু এবছর পূজা হচ্ছে না। মন্দির কমিটির সভাপতি দাবি করেছেন দুই মাস আগে মন্ডপে যাওয়া আসার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর জমির মালিকদের দাবি তারা রাস্তার জন্য জমি দিতে চেয়েছেন। জমির সীমানা নির্দ্ধারণ করার পর তারা নিজেদের জমিতে রাস্তা করে দেবেন।
শনিবার বিকালে হিলালপুর আদিবাসীদের মন্ডপের সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কানাই মন্ডলের বাড়ির একাংশে কয়েক খানা টিনের সাপরা ঘর। সেখানে একটি ঘট বসানো আছে। এ ঘরের বেড়া নেই। মন্ডপের জমি থেকে প্রায় ১০০ ফুট দূরে বাঁশের বাগানের ভিতর দিয়ে মাটির পথ রয়েছে। পথের খানিকটা জমির মালিক জয়নাল বাশের খুটি গেরে দখল করে নিয়েছে। তবে এই মেঠো পথের সাথে মন্ডপের সংযোগ নেই। তবে এই পথে ৩০/৩৫ ঘর আদিবাসীরা যাতায়াত করতো।
উপজেলার সদরের নিমতলা মন্ডপটি অনেক প্রাচীন দূর্গা মন্দির। এই মন্দিরসহ হরিতলা, কমলাপুর, একতারপুর ও অন্য মন্ডপ গুলোতে প্রতিমা তৈরী ও ডেকোরেশনের কাজ চলছে।
আরও পড়ুন – জাতিসংঘে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা
উপজেলার অধিকাংশ মন্ডপে মতই কালীবাড়ি পূজা মন্দিরেও প্রতিমা রঙ এর কাজ চলছে। শিল্পী মিলন পাল জানান, এখানে গত বছর ১০১ খন্ড প্রতিমা তৈরী করে পূজা হয়েছিল। এ ছাড়া অন্য এক ভক্তের মানসার পূজা ছিল। এ বছর খুব ছোট করে নিয়ম রক্ষার পূজা হ্েচ্ছ। ইতোমধ্যে এই মন্ডপের প্রতিমার রঙ এর কাজ শেষ করেছেন।
হিলালপুর আদিবাসী পল্লীর পূজা কমিটির সভাপতি মান্য মন্ডল জানান, তাদের সব আয়োজনই ছিল। শুধু রাস্তা না থাকায় তারা পূজা করতে পারেনি। একজন জমির মালিক ২ হাত প্রশস্ত জমি ফেলে রেখে বাঁশের খুটি গেড়ে দখল নিয়েছে। অন্য জমির মালিকরা জমি দিচ্ছেন না।
রাস্তার জমির মালিক আবুদল মালেক জানান, জমি মাপজোকের পর তারা রাস্তা দিতে চেয়েছেন। আদিববাসীরা তাদের কাছে রাস্তার জন্য আসেনি। আদিবাসীরা এই কৃষকদের জমি দিয়ে চলাচল করে। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে জমির মালিকরা রাস্তা দিতে চেয়েছেন। এ ছাড়া রাস্তার থেকে মন্ডপের দূরত্ব প্রায় ১০০ ফুট পশ্চিমে।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক নারায়ন মালাকার বলেন, প্রতিবছরই দুইএকটা পূজা বারা-কমা করে। গতবছর দুটি মানসার পূজা ছিল। সেটা এবার হচ্ছে না। আবার এ বছর দুটি বারোয়ারী পূজা বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, পূজা কম বেশীর সাথে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পরে না। হিন্দ-মুসলমান সমান ভাবে উৎসব পালন করেন। আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছে।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকতৃা আননুর যায়েদের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, দূরের মন্দির গুলোকে ঝুকিপূর্ণ বিবেচনায় রাখা হয়। তবে মন্দির কমিটি সাথে তিনি যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তার জানিয়েছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।