চুরির অপবাদের প্রতিশোধ নিতে বৃদ্ধাকে হত্যা

0
122

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসায় গৃহকত্রী মনোয়ারা বেগম (৫৫) এর গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে হত্যার ঘটনাটি নিছক ডাকাতি নয়, চোর অপবাদ দেওয়ার প্রতিশোধ নিতেই এই হত্যাকান্ড।

শুক্রবার বিকালে আটক যুবক জিহাদের স্বীকার উক্তির উদ্বৃতি দিয়ে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমান সাংবাদিদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বি-মির্জাপুর গ্রামে শহিদুজ্জামানের বাড়িতে ডাকাতরা হানা দেয়। একপর্যায়ে ডাকাতরা বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগমের গলায় বিদ্যুতের মোটা তার ও ওড়না পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘরের বারান্দায় ফেলে রেখে যায়। প্রতিবেশীরা টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে বাসারুজ্জামান বাদি হয়ে খোকসা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। যার নম্বর ৭, তারিখ ১৭ ফেব্রæয়ারী। আটক জিহাদের স্বীকার উক্তিমূলক জবান বন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। এ রিপোট লেখা পর্যন্ত বিষয়টি পক্রিয়াধীন ছিল।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গৃহকত্রী মনোয়ারা যে ঘরে খুন হয়েছিলেন সেই ঘর থেকে আটক জিহাদ পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। সে জানিয়েছে, তিন বছর আগে এই বাড়ি থেকে ৯ হাজার টাকা চুরির বিষয়ে তাকে মিথ্যা দোষ দেওয়া হয়েছিল। সেই জিদে সে বৃদ্ধাকে হত্যা করেছে। আটক জিহাদ একই গ্রামের হেলাল শেখের ছেলে।

নিহতের ছেলে বাসারুজ্জামান বলেন, তিনি বাড়ির বাইরে ছিলেন। ফোনে মায়ের অসুস্থ্যতার কথা জেনে হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে মৃত মাকে পেয়েছেন। তবে বাড়ি ফিরে যা অনুমান করছেন ডাকতরা তার ৫ ভরি ওজনের স্বর্ণের অলংকার ও নগদ অর্থা নিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, ডাকাতরা কয়েকজন ছিল। তাদের দুইজন মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। আটকা জিহাদ তার মায়ের হত্যাকারী বলেও তিনি দাবি করেন।

খোকসা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান টিপু ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে পৌঁছে তার ভাবি মনোয়ারার গলায় বিদ্যুতের তার ও ওড়না পেচানো অবস্থায় পান। তিনি নিজে ঘরে তালা দিয়ে বৃদ্ধা (ভাবিকে) হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরে বন্ধ ঘরের তালা খুলে জিহাদকে পায়। সে তার ভাবির হত্যাকারী বলেও তিনি দাবি করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানা পুলিশের এসআই আকরামূল হক বলেন, আটক জিহাদ পুলিশের কাছে কিছু বিষয়ে মুখ খুলেছে। সেই জন্য ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বকিার উক্তি রেকর্ডের জন্য আনা হয়েছে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিষয়টি পক্রিয়াধীন ছিল।

থানা ভারপ্রাপ্ত সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, হত্যা কান্ডের জট খুলেছে। তিন বছর আগে শহিদুজ্জামানের বাড়ি থেকে ৯ হাজার টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় জিহাদকে দোষারপ করা হয়। এ অপবাদের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বৃহস্পতিবার বিকালে সে একাই ওই বৃদ্ধার গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছে। এ সময় লোক এসে পরায় মনোয়ারার ঘরেই আত্মগোপন করে সে। প্রতিহিংসা থেকে এ হত্যাকান্ড।