ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহে সৃজনী নামে একটি এনজিও’র চেক জালিয়াতির শিকার সাবেক কর্মচারীর অফিসের মধ্যে কর্মকর্তাদের সামনে বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা।
এনজিওটির সাবেক ওই কর্মচারীর নাম আব্দুস সাত্তার গাজী (৩৫)। গত সোমবার ঝিনাইদহ শহরের পবহাটী পাড়ার সৃজনী হেড অফিসে এই বিষপানের ঘটনা ঘটে। বিষপানে অসুস্থ্য আব্দুস সাত্তার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকার নুরনিয়া গ্রামের রওশন আলী গাজীর ছেলে। তিনি সৃজনী নামের এনজিওটির চট্রগ্রামের লোহাগড়া থানায় সোলার বিভাগের কর্মী ছিলেন।
আব্দুস সাত্তারের অভিযোগ, তৎকালীন কর্মস্থলে ঋনের পাশবহিতে কিস্তির আপডাউন ও অডিটের অনিয়মের টাকা নিয়ে অফিস তার উপর টর্চারিং শুরু করে। ২০১৫ সালে অডিটের ওই টাকা ফেরৎ দেন। ২০১৮ সালে তিনি চাকরী ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। চাকরী ছাড়ার সময় তিনি প্রতিষ্ঠানের পাওয়ানা সবকিছু বুঝিয়ে দেন। কিন্তু তাকে কোন রশিদ দেওয়া হয় না। এ পর্যায়ে সৃজনী আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে সাড়ে ৩ লাখ টাকার চেক জালিযাতির মামলা করে। আদালতে মামলা করার পর তিনি এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা পরিশোধ করেন। সোমবার তিনি আরো পঞ্চাশ হাজার টাকা পরিশোধ করতে আসেন। এক পর্যায়ে মিথ্য দেনার দায়ে অভিযুক্ত ওই কর্মচারী সৃজনী’র কর্মকর্তা দারজুল ইসলাম ও ওয়াহিদুজ্জামানের সামনে বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় আব্দুস সাত্তারকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অসুস্থ্য সাত্তারের স্ত্রী হোসনে আরা অভিযোগ করেন, তার স্বামী চাকরী নেওয়ার সময় সৃজনীর অফিসে একটি সাদা চেক জমা দিয়েছিলেন। চাকরী ছাড়ার সময় চেকটি ফেরত না দিয়ে তা দিয়ে চেক জালিয়াতির মামলা করেছে। ইতোমধ্যে ৫ মাস আগে চেক ফেরৎ পেতে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে। এখন তারা আরো সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করছে। তিনি এই প্রতারকদের বিচার দাবী করেন।
সৃজনীর সহকারী পরিচালক দারজুল ইসলাম জানান, লোহাগড়া শাখায় চাকরী করার সময় বেশ কিছু সোলারের মালামাল নষ্ট করে ফেলে। স্টোর থেকে মালামাল হারিয়ে ফেলে। গ্রাহকের টাকা আত্মসাত করে। এ করণে অডিট রিপোর্ট মোতাবেক সাড়ে ৩ লাখ টাকা আব্দুস সাত্তারের কাছে পাওয়ানা হয়। এটা সে মেনে নিয়েই এক লাখ টাকা ২০ হাজার টাকা জমা দেন। এরপর টাকা দিতে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। সোমবার তিনি ৫০ হাজার টাকা জমা দিতে আসেন। আমরা বলি আর কিছু টাকা দিয়ে ঝামেলা মিটিয়ে যান। আব্দুস সাত্তার সৃজনী অফিসে বিষপান করেন নি বলে সহকারী পরিচালক দারজুল ইসলাম দাবী করেন।
ঝিনাইদহ সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, এনজিওতে চাকরী নেওয়ার সময় চেক রেখে দেবার কোন নিয়ম নেই। কোন এনজিও যদি এটা করে থাকে তবে চরম অন্যায় ও আইন ভঙ্গের কাজ। অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান।
ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই এমদাদ হোসেন হাসপাতালে আব্দুস সাত্তার গাজীর বক্তব্য রেকর্ড করেন।