আরো দুই শিক্ষকের বেতন বন্ধের সুপারিশ, ফেরত দিতে হবে ৪০ লাখ টাকা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
এইচএসসি পাস করে রাতারাতি সহকারী শিক্ষক (কৃষি) বনে যান বাবুল হোসেন। পরে অবশ্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএজিএড কোর্স সম্পন্ন করেও শেষ রা হয়নি তার। সনদ ছাড়া ১৮ বছর চাকরীর বিষয়টি ধরা পড়লেও এখনো বহাল তবিয়তে চাকরী করে যাচ্ছেন।
শৈলকুপা উপজেলার নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক বাবুল হোসেন ও প্রধান শিক্ষক যোগাযোসের মাধ্যমে সাটিফিকেট ছাড়াই চাকুরি করে আসছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীা বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মনকিউল হাসানাত সম্প্রতি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন। আর এ সময় শিক্ষক বাবুল হোসেনের শিক্ষা সনদ ছাড়াই চাকরী করার প্রমান মেলে।
জানা গেছে, শৈলকুপার মকরমপুর গ্রামের বাবুল হোসেন ২০০৫ সালে সনদপত্র ছাড়াই অবৈধভাবে নিয়োগ লাভ করে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) পদে যোগদান করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি খন্দকার গোলাম আকবর হ্যাপী ঝিনাইদহের বিজ্ঞ আদালতে বাবুল হোসেনের অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এক পর্যায়ে শিা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগের পরিদর্শক মোহাম্মাদ মনকিউল হাসানাত নাগেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ওই শিক্ষকের সনদ জালিয়াতির তথ্য পান। এরপর ওই শিক্ষকের বেতন ভাতা হিসেবেক উত্তোলন করা ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৫’শ ১০ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতসহ চলমান বেতন ভাতা স্থগিতের সুপারিশ করেন।
একই স্কুলের সহকারি শিক কম্পিউটার পদে নিলুফা ইয়াসমিন ২০০৩ সালে যোগদান করে ৩৪০০ টাকার স্কেলে এমপিওভুক্ত হন। তার কম্পিউটার সনদটি জাল/ভূয়া প্রমানিত হওয়ায় নিয়োগ বিধিসম্মত হয়নি বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে। নিলুফা ইয়াসমিনের উত্তোলন করা বেতন ভাতার ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭২৭ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।
বিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক মুকুল হোসেনের সাথে সহকারি কৃষি শিক্ষকের নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে পরিদর্শক প্রতিবেদন দাখিল করলেও প্রধান শিক্ষক ব্রডশীটের কিছু তথ্য গোপন করে তা দাখিল করেন। এখন এই জালিয়াতির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সব ধরনের নেপথ্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন প্রধান শিক।
প্রধান শিক মুকুল হোসেন জানান, পরিদর্শন প্রতিবেদনের আলোকে জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে ব্রডশীটে জবাব পাঠানো হয়েছে, সেখানে কোন তথ্য গোপন করা হয়নি।
ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, নাগিরাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের সনদ জালিয়াতিসহ প্রতিবেদনে চাহিত প্রয়োজনীয় তথ্য গোপন করে পুর্নাঙ্গ ক্রডশিট না দেওয়ার কারনে প্রধান শিক্ষকের নিকট ফেরত পাঠানো হয়েছে।