দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে গ্রেপ্তার দেখাবে পুলিশ। সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এ কথা জানিয়েছে।
শফিকুল প্রথম গ্রেপ্তার হন দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায়। এরপর গ্রেপ্তার দেখানো হয় ৫৪ ধারার মামলায়।
ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া ও জনসংযোগ) মাসুদুর রহমান বলেন, শফিকুলের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনটি মামলা রয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা এখন তাঁকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করতে পারেন। বিধি অনুযায়ী এ প্রক্রিয়াতেই এগোনোর কথা বলে জানান তিনি।
এই তিনটি মামলার একটি শেরে বাংলা নগর থানায় বাদী সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখর এবং অন্য দুটি হাজারীবাগ ও তেজগাঁও থানায়। হাজারীবাগ থানায় মামলা করেছেন যুব মহিলা লীগ নেত্রী ইয়াসমীন আরা বেলী এবং তেজগাঁও থানায় বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীমা রহমান।
শফিকুল ইসলাম কাজল বর্তমানে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার হয়ে যশোর কারাগারে আছেন। এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে শফিকুলকে বেনাপোল থেকে উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়। বিজিবি পাসপোর্ট আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে জানায়, পায়ে হেঁটে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিজিবির টহলদল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
শফিকুল ইসলামের ছেলে মনোরম পলক এ প্রতিবেদকে বলেন, বেনাপোল থানা থেকে পুলিশ তাঁকে বাবাকে নিতে যশোরে যেতে বলেছিলেন। তিনি ভাবতেও পারেননি তাঁর বাবাকে আবারও কারাগারে পাঠানো হবে।
সোমবার শফিকুলের আইনজীবী দেবাশীষ দাশ বলেন, পাসপোর্ট আইনে যে মামলাটি হয়েছে সেটি জামিনযোগ্য। আদালতে শফিকুলকে উপস্থাপনের পর তিনি রায় দেবার জন্য কিছুটা সময় নেন। পরে জামিন দিয়ে দেন। কিন্তু কিছুণ পর পুলিশ আদালতকে জানায়, শফিকুলেরর নামে ঢাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা আছে। তাঁকে আটক রাখা প্রয়োজন। এরপরই আদালতের নির্দেশে শফিকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত শফিকুলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন ১৯ মের মধ্যে জমা দিতে বলেছেন।
এর মধ্যে আর জামিন প্রার্থনা করবেন কি না জানতে চাইলে দেবাশীষ দাশ বলেন, মহামারী শুরুর পর আদালত সংপ্তি সময়ের জন্য বসছে। সাধারণত আসামি গ্রেপ্তারের পর তাঁদের ব্যাপারে পরবর্তী বিচারিক ব্যবস্থাটুকু নেওয়ার জন্যই আদালত কাজ করছেন। রোববার দুপুরের পর আদালত বসে এবং কিছুণ পর কার্যক্রম শেষ হয়ে যায়। ফলে একটি মামলায় জামিন হলেও, অন্য মামলায় জামিন আবেদনের সুযোগই পাননি তাঁরা।
এদিকে শফিকুল ইসলাম কাজলের পরিবার চকবাজার থানায় যে অপহরণ মামলা করেছিল, সে মামলার পরবর্তী কার্যক্রম কি হবে জানতে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মওদুদ হাওলাদারের সঙ্গে কথা হয়। মওদুদ বলেন, অন্য মামলাগুলোয় শফিকুল ইসলাম কাজল আসামি হলেও, অপহরণ মামলায় শফিকুল ‘ভিক্টিম’। তবে তিনি জামিন পাবার আগে এই মামলায় তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ চকবাজার থানার নেই।
চকবাজার থানার ওসি বলেছিলেন, নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে শফিকুল ইসলামের মুঠোফোন বন্ধ ছিল। গতমাসের ৯ এপ্রিল খুব অল্প সময়ের জন্য ফোনটি খোলা হয়। তখন তাঁর অবস্থান ছিল বেনাপোল। ঢাকা থেকে অপহরণের একমাস পর বেনাপোলে তাঁর অবস্থান ও ভারত থেকে দেশে পায়ে হেঁটে প্রবেশ নিয়ে সরকার কিছুই বলছে না।