দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক
২৮ অক্টোবরের বিএনপি মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পরে দলটির ডাকা হরতাল ও অবরোধে গাড়ি ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ডিএমপির ৩৫টি থানায় ১০২টি মামলা করেছে পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত বিএনপির এক হাজার ৭৩৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিএরপির প্রথম সাড়ির নেতাদের এই সব মামলায় আসামী হয়েছেন। ইতোমধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও শামসুজ্জামান দুদুসহ ১ হাজার ৫৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ ১৮৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এরই মধ্যে রবিবারও বিএনপির ৯২ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সমাবেশের ডাক দেয়। শর্তসাপেে ডিএমপির প থেকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয় সব দলকে। এই দিন নির্ধারিত সময়ের আগেই সমাবেশ স্থলে জড়ো হতে থাকেন বিএনপিসহ সব দলের নেতাকর্মীরা। বিএনপির নেতাকর্মীরাও নয়াপল্টনসহ আশপাশের এলাকায় জড়ো হন। কিন্তু দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে পুলিশর সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে দুই পরে (বিএনপি-পুলিশ) সংঘর্ষ রণেেত্র রূপ নেয়। সেখানে পুলিশের এক সদস্যকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। আহত হয় আরও শতাধিক সদস্য। সংঘর্ষে বিএনপির নেতাকর্মীরাও নিহত ও আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন দলটির নেতারা। ওই ঘটনায় বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।
রাজধানীসহ সারাদেশে বিএনপি ও তার মিত্ররা হরতালের ডাক দেয়। এছাড়া প্রথম দফায় তিনদিন (৩১ অক্টোবর- ২ নভেম্বর) এবং দ্বিতীয় দফার (৫-৬ নভেম্বর) অবরোধে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে আরও ৬২টি মামলা হয়। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের ঘটনায় ৪০টি মামলা হয়েছে। এদিকে আবার তৃতীয় দফার (আগামী ৮-৯ নভেম্বর) অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি ও তার মিত্ররা।
ডিএমপির আইনশৃঙ্খলা ও সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তার ও মামলা সংক্রান্ত প্রাত্যহিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৯ দিনে ঢাকায় বিএনপির ১ হাজার ৫৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করার তথ্য জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ৬৯৬, ২৯ অক্টোবর ২৫৬, ৩০ অক্টোবর ১৫৮ ও ৩১ অক্টোবর ১৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর থেকে প্রায় একশ‘ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ডিএমপির আট বিভাগের ৩৫টি থানায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে ১০২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার বাদী পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মতিঝিল বিভাগে ৩৩টি, মিরপুর ১৮টি, ওয়ারী ১৫টি, গুলশান ১১টি। এছাড়া রমনা ১১টি, লালবাগ ও তেজগাঁও ৫টি করে, উত্তরা বিভাগ ৪টি। বাকি থানাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পল্টন থানায় ১৫টি মামলা হয়েছে।
এদিকে র্যাব থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ দিনে ১৮৫ বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ নভেম্বর ২৪ জন, ৩ নভেম্বর ১৯ জন, ৫ নভেম্বর ৪০ জন ও ৬ নভেম্বর ২৬ জন বিএনপি নেতা-কর্মী রয়েছেন। বাকিদের বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।