কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, বিগত ৫৩ বছর বাংলাদেশের আমল, ২৪ বছর পাকিস্থানের আমল, ৭৭ বছরের সমস্ত বঞ্চনার এবার কবর রচনা করতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদকে শিকড়সহ উপড়ে ফেলতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধানে আর কখনো ধর্ম নিরপেক্ষতা মতবাদ নামক কুফরি মতবাদ ভারতীয় এজেন্ডা আর বাংলাদেশে দেখতে চাই না। আমরা বৈষম্যহীন ইনসাফপূর্ণ একটা রাষ্ট্র ও সমাজ গঠন করতে চাই। ইসলামী ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্রের দিকে অগ্রসর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ এবং ইসলাম এক সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশের শত্রæ যারা ইসলামের শত্রæ তারা। বাংলাদেশে ইসলাম আক্রান্ত হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে।
শাপলা চত্বর ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার বিচার, জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে আলেম সমাজের অবদানের স্বীকৃতি ও খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবীতে আয়োজিত গণ সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কুষ্টিয়া জেলা শাখার আয়োজনে সোমবার (১৭ ফেব্রæয়ারি) বিকালে কুষ্টিয়া হাই স্কুল মাটি এ গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করা হয় ৭২ সালের সংবিধানের মাধ্যমে। এভাবেই ৭১ এর চেতনার নামে বিগত ৫০ বছর পর্যন্ত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী বাকশালি শক্তি ৭২ এর চেতনা গেলাবার চেষ্টা করেছে। ২০২৪ সালে যেই ঐতিহাসিক বিজয় আমরা অর্জন করেছি। সেই বিজয়কে কাঙ্খিত লক্ষ্য পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। বৈষম্যের করব রচনা করতে হবে। সমস্ত জুলুম ও শোষণকে শেকড়সহ উপড়ে ফেলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগের দিনেও বললেন, শেখ হাসিনা পালায় না। এই কথা বলে সে তার নেতাকর্মীদের জনগণের মুখোমুখি আরও বেশি যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিয়েছে। তারপর পালিয়ে গেছে। পালিয়ে গিয়ে নিজে এবং নিজের পরিবারের আখের গুছিয়েছে। এতো বিশাল ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বেগম জিয়া ও ড. ইউনুসকে দায়ী করবেন না। ধ্বংসের জন্য সবচেয়ে বড় দায়ী হচ্ছে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার যারা রাজনীতি করতে চায়, তাদের মতো কুপোকান্ডক আর কেউ হতে পারে না। যেই ফ্যাসিবাদ বাংলার মাটি থেকে বিতাড়িত হয়েছে, সেই ফ্যাসিবাদকে আর কখনো বাংলার মাটিতে পুনর্বাসিত হতে দেয়া যাবে না।
মামুনুল হক বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুর্শাসনকারী শক্তির প্রত্যেকটা খুনির বিচার করতে হবে। এ সময় তিনি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চিরতরে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের উপর জুলুম চালিয়েছে, অন্যায় চালিয়েছে। সে এই দেশটাকে স্বাধীন দেখতে চায়নি। ৭৫ সালের পর থেকে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে, মানুষের কাছে থেকে প্রতিশোধ গ্রহণের রাজনীতি করেছেন। শেখ হাসিনা গোটা বাংলাদেশটাকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর পাঁয়তারা চালিয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে বাংলাদেশকে তলা বিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে। অবশিষ্ট যা ছিল, ১৪টা লাগেজে ভর্তি করে নিয়ে ভারতে পালিয়েছে ৫ আগস্ট। হেলমেট বাহিনী হাতুড়ি বাহিনীর হাতে অস্ত্র দিয়ে বাংলার দামাল ছেলেদের বুক গুলোতে বুলেট দিয়ে ঝাজরা করেছে। বাংলাদেশে জনরোষের মুখে পড়ে অনেকেই ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
আরও পড়ুন – সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন-অবস্থান ধর্মঘট
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুল লতিফ খানের সভাপতিত্বে গণ সমাবেশ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শরাফত হুসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ কামাল উদ্দীন। এসময় দলের স্থানীয় ও সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।