বিল পরিশোধের তিন দিনের মাথায় রাস্তা গেলো নদীর জলে

0
235

স্টাফ রিপোর্টার

চুড়ান্ত বিল পরিশোধের তিন দিনের মাথায় গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের বসতিদের যাতায়াতের জন্য সদ্য নির্মিত সেতুতে ওঠার রাস্তার মাটি নদীর জলে ধুয়ে গেছে। নকশা অনুযায়ী নির্মান না করায় সেতুটি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদীর জলে ধুয়ে যাওয়া রাস্তাটি স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে ভূমিহীনরা।

জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরের ত্রাণ ও পুর্নবাসন মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে হিজলাবট গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে যাতায়াতের রাস্তার মোড়াগাছা হেলিপ্যাড এলাকায় গড়াই নদীর কোলের ভিতরে সেতুটি নির্মান করা হয়। যার ব্যয় হয় প্রায় ২৮ লাখ ১১ হাজার টাকা। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাহিম এন্টারপ্রাইজ নকশা পরিবর্তন করে সেতুটি তৈরী করে বলে গুচ্ছ গ্রামের ভুমিহীনরা অভিযোগ করেন। বর্ষা পানির তোরে সদ্য নির্মিত সেতুটি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আশঙ্কাও করছেন তারা। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে চুড়ান্ত বিলের সমুদয় টাকাও নিয়ে গেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

বর্ষা মৌসুমের শুরুতে গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেতুতে ওঠার রাস্তার মাটি নদীর জলে ধুয়ে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে গুচ্ছ গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক ভূমিহীর পরিবারের লোক। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ভূমিহীনরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। রাস্তা সংস্কার বা সেতু রক্ষায় কোন ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা।

অবশেষে বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে গুচ্ছ গ্রামের ভূমিহীনরা নিজেদের উদ্যোগে সেতুর দুই পাশে বাঁশের বেড়া ও বালির বস্তা ফেলে রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন।

ভূমিহীন নেতা ফরহাদ বলেন, ঠিকাদার নকশার পরিবর্তন করে সেতুর নির্মান কাজ করেছে। এ বিষয়ে তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করেছিলন। কিন্তু উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার হুমকী দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাযোগে ঠিকাদার বিল নিয়ে চলে গেছে।

ওসমানপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মঞ্জুরুল কবির সেতু নির্মান কাজ শেষ হয়েছে কিনা তা জানেন না। তবে সেতুর নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন। ভূমিহীনরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রাস্তা সংস্কার করছেন বলেও তিনি জানান।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক আমিরুল ইসলাম তুষার বলেন, তিনি সেতুর উচ্চতা বাড়িয়েছেন, সে কারনে উইং ওয়াল চার ফুট ছোট করেছেন। এ ছাড়া প্রায় ৪শ ফুট অতিরিক্ত মাটির রাস্তাও নির্মান করেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিমুল হক এ ব্যাপারে কথা রাজি হন নি। এছাড়া রাস্তা নদীর জলে ধুয়ে গেছে বলে তিনি শোনেন নি। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন রোধে উদ্যোগে নেওয়ার কোন অপসোন নাই বলেও তিনি জানান। তবে তিনি স্বীকার করেন চলতি সপ্তাহে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চুড়ান্ত বিল নিয়ে গেছে।