ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের সর্বশেষ অবস্থান বিহারে। যদিও বন্ধু গোপাল বিশ্বাসকে তিনি জানিয়েছিলেন, ভিআইপি সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি পৌঁছেছেন। তার গন্তব্যস্থল এবং মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ভিন্ন হওয়ায় রহস্য দানা বেঁধেছে। এদিকে এমপি আনোয়ারুল আজিমের নিখোঁজ হওয়ায় উদ্বেগে রয়েছেন তার পরিবার এবং স্বজনরা।
এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বরানগর থানায় শনিবার (১৮ মে) নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন আনোয়ারুল আজিমের বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। তাকে খুঁজে পেতে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস।
জানা গেছে, গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য গেদে বর্ডার হয়ে ভারতের কলকাতায় গিয়েছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) কথা হয়েছে। এরপর থেকে সব প্রকার যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়ে কোনো হোটেলে না উঠে মন্ডলপাড়া লেন বড় নগরের তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে উঠেন। নিখোঁজের পর বন্ধু গোপাল বিশ্বাসকে হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজে এমপি আনোয়ারুল আজিম জানিয়েছিলেন, ‘দিল্লি পৌঁছেছি, সঙ্গে ভিআইপি আছেন’।
যদিও দিন দুয়েক আগে তার ভারতীয় নম্বরটির টাওয়ার লোকেশন বিহারের একটি জেলায় পাওয়া গিয়েছিল। তারপর সিমটি মোবাইল থেকে খুলে ফেলা হয়েছে।
থানায় করা নিখোঁজ ডায়েরিতে আনোয়ারুল আজিমের বন্ধু গোপাল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ১২ মে বরানগরে তার বাড়িতে এসে উঠেছিলেন আনোয়ারুল আজিম। পরের দিন ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছেন বলে বের হয়ে আর ফেরেন নি।
পরে হোয়াটসঅ্যাপ করে জানান, বিশেষ কাজে দিল্লি যাচ্ছি। তোমাদের ফোন করার দরকার নেই। ১৫ মে ফের ে হোয়াটসঅ্যাপের ম্যাসেজ দিয়ে জানান, আমার সঙ্গে ভিভিআইপিরা আছেন। যোগাযোগ করার দরকার নেই। বাংলাদেশে ব্যক্তিগত সচিবকেও সেটি ফরওয়ার্ড করেন। এরপর থেকে তাকে ফোনে আর পাওয়া যায় নি।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায় নি। শুক্রবার (১৭ মে) এমপির মেয়ে ভারতে অবস্থানরত বাবার বন্ধুকে গোপাল বিশ্বাসকে ফোন করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরপর গতকাল শনিবার (১৮ মে) গোপাল বিশ্বাস বরানগর থানায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ করেন।
একইসঙ্গে বিষয়টি তিনি কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে জানান।
উপ-দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংস্থাগুলিকে জানা হয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
দূতাবাস সূত্রে আরও জানা গেছে, বন্ধুকে দিল্লি যাওয়ার কথা বললেও এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের ভারতীয় নম্বরটি ১৭মে শেষ বার খোলা হয়েছিল বিহারের একটি জায়গায়। তারপর সিমটি মোবাইল থেকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ফলে এমপি আনোয়ারুর আজিম এখন কী অবস্থায় রয়েছেন, তা নিয়ে উদ্বেগে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের কর্মকর্তারা। তারা ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন।