ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকল (মোচিক) ছাত্রলীগ ও যুবলীগ পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই চিনি কলে অবৈধ ভাবে ১৩৭ জন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীকে দৈনিক হাজিরায় শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল আলম আ’লীগের সাবেক এমপি আনারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গোলাম রসুল দলীয় বিবেচনা অর্থ বানিজ্যের মাধ্যমে অনভিজ্ঞদের শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগায়। তবে এসব শ্রমিক কর্মচারীদের কোন নিয়োগপত্র নেই বলে জানাগেছে। অবৈধ শ্রমিকদের আবারও কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মিলকর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে মোবারকগঞ্জ চিনিকল এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৩-২০২৪ আখ মাড়াই মৌসুমে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে মিলটির বিভিন্ন বিভাগে ১৩৭ জন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার, মিলের এমডি সাইফুল আলম ও মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল শ্রমিকদের তালিকা। এসব শ্রমিকের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল হোসেন, সহ-সভাপতি মিরাজুল ইসলাম ও কালীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর সজল রয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রলীগ যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িতদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
৫ আগস্ট হাসিনার পতন ঘটলে আত্মগোপনে চলে যায় শ্রমিক ইউনিয়নের দুর্নীতিবাজ সভাপতি গোলাম রসুলসহ অনেক শ্রমিককে অবৈধভাবে নিয়ো দেয়া হয়। আগামী ১৩ ডিসেম্বর মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের আখ মাড়াই মৌসুম উদ্বোধনের আগেই মিল কর্তৃপক্ষ জনবল সংকটের কথা বলে পলাতক যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাজে নেওয়ার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) এসব শ্রমিকরা কাজে যোগদানের চেষ্টা করলে সাধারণ শ্রমিকরা বিরোধিতা করে তাদের ধাওয়া করে। খবর পেয়ে যৌথবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
সাধারণ শ্রমিক ইলিয়াস রহমান মিঠু জানান, বিগত সরকারের সময়ে একদম অবৈধভাবে ১৩৭ জন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। নূন্যতম এসকল শ্রমিকদের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়নি। সাবেক এমপি আনার ও তার বন্ধু গোলাম রসুল টাকার বিনিময়ে এ সকল শ্রমিকদের নিয়োগ দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। আর এই অনৈতিক কাজে সহায়তা করেন মিলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম।
আরও পড়ুন – গণহত্যার দায়ে আদালতই শেখ হাসিনাকে দেশে আনবে – আমান উল্লাহ আমান
শ্রমিক জবেদ আলী জানান, গত মৌসুমে নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ জনের অধিকাংশই ছাত্রলীগ-যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাদের আবারও কাজে লাগাতে চাইলে সাধারণ শ্রমিক তাদের প্রতিহত করবে। ফলে এ ঘটনা নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন – দুই দুর্বৃত্তকে ধরলো এক ইউটিউবার নারী
সুগার মিলের ব্যবস্থপনা পরিচালক সাইফুল আলম বলেন, টাকা নিয়ে শ্রমিক নিয়োগ করার বিষয়টি সঠিক না। যে ১৩৭ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল সেটি দৈনিক হাজিরায়। তাদের কোন নিয়োগই নাই। তাদের পুনরায় নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তারা মিলের মধ্যে কাজের দাবীতে জড়ো হচ্ছে বলে জানতে পারছি।