অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধ করার কৌশল জানা আছে: প্রধানমন্ত্রী

0
84
ছবিটি - সংগৃহীত

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ খুন করা, ধ্বংস করা, পুলিশের ওপর হামলা করা। জ্বালাও-পোড়াও এটাই তাদের উৎসব, এটাই তাদের চরিত্র। এই অগ্নিসন্ত্রাস কীভাবে বন্ধ করতে হয় সেটা আমাদের জানা আছে।

মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন উপলে শনিবার রাজধানীর আরামবাগে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি মানেই ধ্বংসের রাজনীতি। ২৮ অক্টোবর পুলিশ যথেষ্ট সহনশীলতা দেখিয়েছে। অথচ তারা কী করল? রাস্তায় পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করল, আওয়ামী লীগ ও মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করল। এটাই কি রাজনীতি?

শেখ হাসিনা বলেন, রাজশাহীতে মাটিতে ফেলে পুলিশ হত্যা করেছিল, সেটা স্মরণ রাখা দরকার। আমি ঢাকার মানুষকে বলব, যারা আগুন দিতে আসবে তাদের প্রতিহত করতে হবে। যে হাত দিয়ে আগুন দেবে সেই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন আমি নাকি প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা দলের প্রধানও হতে পারব না। আজ কে, কোথায় আছে। আমি জনগণের সেবা করতে চাই, দেশের উন্নয়ন করতে চাই। আমি দারিদ্র্য কমিয়ে এনেছি, খালেদার সময় দেশের ৪১ শতাংশ মানুষ দরিদ্র ছিল। আওয়ামী লীগ মতায় এলে দেশ উন্নত হয়, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, জাতির পিতার মতো আমিও নিজেকে দেশের জন্য উৎসর্গ করলাম। বিএনপি দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে, আর আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা আকাশ পথে মেট্রোরেলে করেছি, এখন পাতাল রেলের কাজ চলবে। সেটি নিয়েও কাজ চলছে। মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছি। রুটটি হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা হয়ে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। ৪১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানির সমস্যা, বিদ্যুৎ সমস্যা নিরসন করেছি। হাতিরঝিলকে দৃষ্টিনন্দন করেছি। দেশে জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া মিলে ২১ বছর মতায় ছিল। দেশে পানি নাই, রাস্তাঘাট নেই অভাব আর অভাব। এ সময় মানুষ ছিল অন্ধকারে। জিয়াউর রহমান মতায় এসে সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে। সেই জিয়াউর রহমানের দলই বিএনপি। তারা গ্যাস বিক্রির জন্য মুচলেকা দিয়ে মতায় আসে। এসে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে। আর আমরা মতায় এসে রাস্তাঘাট, কালভার্ট, ব্রিজ নির্মাণ করেছি। মাংস, ডিম, মাছ, শাক, সবজি উৎপাদন বাড়িয়েছি। সারাদেশে স্বাস্থ্য সুরার জন্য কমিউনিটি হাসপাতাল করেছি।

পোশাক শ্রমিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যের কথায় নেচে কারখানায় হামলা করে, কারখানা ভেঙে, সেখানে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশের তি করলে, নিজেরই তি হবে। আর কারখানা বন্ধ করলে ওই গ্রামেই ফিরে যেতে হবে। বিনা কাজে জীবনযাপন করতে হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে পোশাকশ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরপর ২০০৯ সালে মতায় আসার পরেও বেতন বাড়ানো হয়েছে। যে কারখানা আপনাদের রুটি-রুজি দেয়, শ্রম দিয়ে পয়সা কামাই করেন, সেই কারখানা ভাঙচুর করলে আল্লাহও নারাজ হবে। আপনাদের যা প্রয়োজন হয়, অসুবিধা আমরা দেখি।

এ সময় কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মতায় ছিল তখন তো কিছু করেনি। যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকারই। আওয়ামী লীগ জানে মানুষের কষ্ট দূর করতে।

সরকারপ্রধান বলেন, মজুরি কমিশন বসেছে। ধৈর্য ধরতে হবে। কারা উসকানি দিচ্ছে সেটা আমরা জানি। যার ভাঙচুরে জড়িত, বিএনপির নেতাকর্মীদের বলবো, হুকুমদাতা দেশেই থাকুক বিদেশেই থাকুক, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আর ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ গ্রহণ করে হুকুমজারি করে, ওই বিদেশ থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে শাস্তি দেবো, ওই কুলাঙ্গারকে। কেউ ছাড়া পাবে না।

দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত যেন দেশের মানুষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারতে না পারে, অত্যাচার করতে না পারে, তার জন্য সজাগ থাকতে হবে।

ঢাকাবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট পেয়েছি বলেই আজকে এত উন্নতি হচ্ছে। সেই কথাটা যেন তারা মনে রাখে। সেটা মনে রেখে আগামী নির্বাচনের তফসিল যেকোনও সময় ঘোষণা হবে। আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে, যাকেই প্রার্থী করি সেটা কানা, খোড়া যেই হোক, তাকে নৌকায় মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। করবেন কিনা হাত তুলে ওয়াদা করেন। এ সময় উপস্থিত জনতা হাত নেড়ে সমর্থন জানায়। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার নৌকা জিতবে। এ দেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়, সেটাই চাই। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, এবার জিতবে নৌকা শ্লোগান গান দেন।

ঢাকা মহানগর দণি আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ খোকন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
জনসভা সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, দেিণর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ প্রমুখ।