আজ রাতে স্কুল ছাত্রীর বিয়ে!

0
465
chiled-mare-12p-8-compressed
স্কুল ছাত্রীর মা।

স্টাফ রিপোর্টার

ছাত্রী (১৫)। কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার মোড়াগাছা নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির মানবিক বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী। আজ শুক্রবার রাতেই বাবা মা তাকে জোর করে বিয়ের পিঁড়িতে বসাচ্ছেন। তারও এক কথা জোর করে বিয়ে দিলেই সে আত্মহত্যা করবে।

ফারজানার বাবা ফারুক পেশায় দিনমজুর। মা কুলছুম পেশায় গৃহিনী। ছাত্রীটির আত্মহত্যার ঘোষণার সংবাদটি নিশ্চিত করেন তারই স্কুলের একাধিক শিক্ষক ও বন্ধবীরা। তবে ভয়ে কেউই নাম প্রকাশ করতে রাজি হন নি।
শুক্রবার সকালের কোন এক সময় সুযোগ পেয়ে ওই শিক্ষার্থী প্রতিবেশী তারই এক শিক্ষিকার বাড়িতে গিয়ে তার বিয়ের বিষয়টি জানিয়ে ওই শিক্ষিকাকে যে কোন উপায়ে এই বিয়ে বন্ধের অনুরোধ করেন। পরিবারের লোকজন জোর করে তাকে বিয়ে দিলে সে আত্মহননের পথ বেছে নেবে বলেও ওই শিক্ষিকাকে জানায়।

মোড়াগাছা নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এক শিক্ষক জানান, শুক্রবার সকালে ওই শিক্ষার্থীর প্রতিবেশী এক শিক্ষিকা তাকে ওই ছাত্রীর আজ বিয়ে হচ্ছে বলে তাকে অবহিত করেন। নবম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর বিয়ের সংবাদটি জানতে পেরে শুক্রবার বেলা ১১টায় খোকসা ইউনিয়নের মোড়াগাছা গ্রামের ওই ছাত্রীর বাড়িতে সরেজমিন গিয়ে দেখতে পান বাড়িতে আত্মীয় স্বজনরা এসেছে। কনের জন্য খিড় (পায়েস) রান্না হয়েছে। বাড়ির ভেতরে রান্না ঘরে প্রচুর পিয়াজ রসুন ছিলার কাজ চলছে। বাইরে একটি চুলায় রান্না করছেন এক জন স্থানীয় বার্বুচি।

ক্যামেরা হাতে সাংবাদিক দেখেই তেরে এলেন ওই ছাত্রীর মা। মেয়ের বিয়ের কথা অস্বীকার করে বললেন ঘর তোলা হয়েছে তাই পাড়ার লোকদের খাওয়াতে হবে। পরে কথা পাল্টে বললেন তার ছেলে মারা গিয়েছিল তাই তার জন্য মিলাদ দেওয়া হবে। সাংবাদিকরা ওই শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলতে চাইলেও তাকে লুকিয়ে রাখা হয়। অনেক অনুরোধের পরও পরিবারের লোকজন সাংবাদিকদের সামনে ওই শিক্ষার্থীকে হাজির করেনি।

একটু এগিয়ে আসতেই কথা বলা হয় ওই ছাত্রীর দুই বান্ধবীর সাথে। তারা সাফ জানায় যার মেয়ে সে যদি বিয়ে দেয় তাদের আর কী করার আছে?

খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল আলম বলেন, ছাত্রীর বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে দুপুরে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরিবারের লোকজন সবাই বিষের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। বলা হচ্ছে, মৃত ছেলের চল্লিশা। একজনের মৃত্যুর কথা বললে তো আর কিছু করার থাকে না। তবে পুলিশ স্থানীয়দের মোবাইল নম্বর দিয়ে এসেছে। যাতে বিয়ের লোকজন বা বরযাত্রী এলে তারা পুলিশকে খবর দেয়।