কিছু মানুষ

0
210
DROHO 11P-2
ড. মুন্সী মুর্তজা আলী

ড. মুন্সী মুর্তজা আলী

আজ “কিছু মানুষ” নিয়ে লিখবো। তবে সব মানুষ নিয়ে নয়। সমাজে শত রকম মানুষ বাস করে। প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেক মানুষ থেকে আলাদা হবে। কারোর সাথে কারোর মিল থাকবে না। এটাই স্বাভাবিক। এটাই প্রত্যেক মানুষ বা ব্যক্তির ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবোধ। তবে কিছু সাধারণ বিষয়ে প্রত্যেক মানুষের মধ্যে সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি খুঁজে পাওয়া যায়।

যেটা দিয়ে মানুষের সাধারণীকরণ (মবহবৎধষরুধঃরড়হ) বা সরলীকরণ করা যায়। সরলীকরণ হলো, সকল মানুষের ভাবনা ভিন্ন হলেও অনেক বিষয়ে বিশেষ করে সাধারণ কোন বিষয়ে মানুষের সকল ভাবনা বা মনোভাব একরকম হবে। যেমন, উপকারীর উপকার স্বীকার করা, মানুষের বিপদে এগিয়ে আসা, কাউকে ক্ষতি না করা, মানুষ হিসেবে মানবিক হওয়া, ইত্যাদি বিষয়।

অর্থাৎ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক কার্যক্রম। এসব বিষয় মানুষের জীবন কার্যক্রমে সাধারণ বা স্বাভাবিক বিষয়। এসব সাধারণ বিষয় হলো মানুষের সাধারণীকরণের মানদন্ড বা প্যারামিটার। এখন মানুষের সেই সাধারণীকরণ বা সরলীকরণের বিষয়ের দিকে নজর দেয়া যাক।

শুরুতেই বলেছিলাম, সমাজে শত রকম মানুষের বসবাস। সব মানুষই আপনার বিপদে সাহায্য করবে, আপনার ভাল কাজকে ভাল চোখে দেখবে, আপনাকে সৎ পরামর্শ দিবে মানে সাধারণীকরণ করবে; বিষয়টি অত সহজভাবে সবাই ভাবেনা। কিছু মানুষ আপনার বিপদে সাহায্য করবে না। এমনকি আপনার আত্মীয় স্বজনদের কেউ কেউও আপনার বিপদে এগিয়ে আসবে না। অথচ আপনার সমালোচনা করতে কুন্ঠাবোধ করবে না। আপনার বিপদে পরামর্শ দিলে আপনি হয়তো বিপদ থেকে মুক্ত হতে পারতেন। অথচ তারা আপনাকে সাহায্য করবে না। তারা মানে, ঐ কিছু মানুষ অন্যদের কাছে বলে বেড়াবে, আপনি তাদের সাহায্য নিচ্ছেন না। তাদের সাহায্য চাইতে গেলে তখন কিন্তু আর তারা আপনার আহ্বানে সাড়া দিবে না। তারা তাদের নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। আপনাকে একাই সংগ্রাম করতে হবে। তাই কারোর দিকে তাকিয়ে থেকে কোন লাভ নেই।

এই কিছু মানুষ আপনার সাহায্য পেয়ে সুনাম করবে। তাদের কেউ কেউ আবার উপকারের মধ্যে আপনার দোষ খুঁজে বেড়াবে। আর উপকার করা বন্ধ করে দিলে আপনার বদনাম করা শুরু করে দিবে। তাদের স্বার্থে কাজ করলে আপনি ফেরেশতা। আর তাদের স্বার্থে আঘাত পড়লে আপনি হবেন তখন খুব খারাপ একটা মানুষ।

এই “কিছু মানুষ” সমাজে অতীতেও ছিল। এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে এই কিছু মানুষের উপর রাগ করে নিজে কষ্ট পাওয়া বোকামী ছাড়া কিছুই নয়। এসব নিয়ে ভাবলে নিজেরই শারিরীক ও মানসিক ক্ষতি। পারলে এদেরকে উপকার করবেন। এরা আপনাকে ক্ষতি করলেও আপনি তাদেরকে উপকার করতে না পারলেও ক্ষতি করবেন না। কারণ, কিছু মানুষ খারাপ হলেও আপনাকে ভাল হতে হবে। তাদের পছন্দ না করলে এড়ায়ে চলুন। নিজের মত করে থাকুন। জীবনে বেশী ঝামেলা নিয়ে বেঁচে থাকলে আপনারই ক্ষতি। কেননা, এই কিছু মানুষ আপনার মনে কষ্ট বাড়িয়ে দিয়ে তারা কিন্তু ঠিকই আরাম আয়েসে জীবন কাটাবে। তাই যত কম ঝামেলা হয়, সেভাবে চলুন। ঝামেলামুক্ত জীবন গড়ুন।

অধ্যাপক, ড.মুন্সী মুর্তজা আলী, লোক প্রশাসন বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।