কুমারখালীর ঘটিগরম বিক্রেতা বয়স্কভাতা কার্ড পেলেন

0
116

নিজের অসহায়ত্ব্যের কথা ইউএনও’কে জানিয়ে

কুমারখালী প্রতিনিধি

হতদরিদ্র বৃদ্ধ আমিন উদ্দিন শেখ (৭৫)। সহধর্মীনি স্ট্রোকজনিত প্যারালাইজড রোগী। অসুস্থ্য স্ত্রীর চিকিৎসা ও সংসারের ব্যয় নির্বাহের জন্য এই বয়সেও কাঁধে তুলে নিয়েছেন ঘটিগরমের (রসুন-মরিচ ও মসলা মেশানো ভাজাচিড়া) গরম ড্রাম। প্রায় প্রতিদিনিই শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালতের বারান্দা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে ঝুনঝুনি বাজিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখাযায় বয়োবৃদ্ধ আমিন উদ্দিনকে।

জানা গেছে, কয়েক কেজি চিড়া ভেজে টিনের ড্রামের মধ্যে জ্বলন্ত কয়লা দিয়ে তার উপর ভাজা রসুন-কাঁচামরিচ ও মসলা মিশিয়ে তৈরী করেন সুস্বাদু ঘটিগরম।

বয়োবৃদ্ধ আমিন উদ্দন তিন সন্তানের জনক। একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন আর দুই ছেলে দিনমজুরের কাজ করেন। তাঁর বাড়ি কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের খয়েরচাড়া মাঠপাড়া গ্রামে।

প্রায় মাসখানেক আগে তিনি কুমারখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঘটিগরম বিক্রি করতে এসে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে নিজের অসহায়ত্ব্যের কথা বলেছিলেন ইউএনওকে। আর ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল বয়োবৃদ্ধ আমিন উদ্দিনের কথা শুনে তাৎক্ষণিক দুই হাজার টাকা সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে ভাতার আওতায় আনার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন।

বুধবার দুপুরে বয়োবৃদ্ধ ঘটিগরম বিক্রেতা আমিন উদ্দিনকে নিজের কার্যালয়ে ডেকে এনে তাঁর হাতে বয়োস্কভাতার বই তুলে দেন। এ সময় উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আলী সহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বয়স্কভাতার বই হাতে পেয়ে হতদরিদ্র বয়োবৃদ্ধ আমিন উদ্দিন বলেন, মাসখানে আগে একদিন ঘটিগরম বিক্রি করতে এসে ইউএনও স্যারের কাছে আমার কষ্টের কথাগুলো বলেছিলাম। সে সময় তিনি আমাকে ভাতা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। আর আজ ডেকে এনে ভাতার বই দিলেন। আমার বিশাল উপকার হবে।

আরো পড়ুন – কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, বয়োবৃদ্ধ আমিন উদ্দিন ঘটিগরম বিক্রি করতে এসে আমার কার্যালয়ে এসে তাঁর অসহায়ত্ব্যের কথা জানান। সেদিন উপজেলা প্রশাসনের প থেকে দুই হাজার টাকা দিয়েছিলাম। আর তিনি ভাতার আওতায় আসার উপযুক্ত হওয়ায় তাঁকে বয়স্ক ভাতার বই দেওয়া হলো। এখন থেকে তিনি আর্থিক সুবিধা পাবেন এবং তাঁর অসুস্থ স্ত্রীর জন্যেও ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।
ইউএনও আরো বলেন, প্রশাসন জনগনের জন্যই। তাই সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে কারো কাছে ধর্ণা না দিয়ে সরাসরি কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে আসুন। আমরা সাধ্যমত সেবা প্রদানের চেষ্টা করব।