কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আরিফুল, খোকন ওরফে জামাল মিয়া এবং হারুন। এরা তিন জনই আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তবে এদের অপরাধের ধরণটা একটু ভিন্ন। কখনো র্যাব কখনো পুলিশ সদস্য, আবার কখনো সেনাবাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে এরা ডাকাতি, ছিনতাইসহ অপরাধ কর্মকান্ড করে বেড়াতো। গত তিন মাসে এই বাহিনীর সদস্যরা কুষ্টিয়াসহ সারা দেশে এভাবে প্রায় শতাধিকেরও বেশি অপরাধ কর্মকান্ড করেছে।
সোমবার দুপুরে পুলিশ লাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান। গ্রেফতারকৃত তিন জনের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ওয়াকিটকি, হাতকড়া, সেনা সদস্যের পোশাক এবং বিভিন্ন ধরনের পুলিশী কাজে ব্যবহৃত উপকরণ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, গত কয়েক দিনে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে বেশ কয়েকটি ছিনতাই এবং ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল প্রযুক্তির ব্যবহার করে বিভিন্ন পন্থায় চক্রটিকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতে। রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জেলার ভেড়ামারার ১২ মাইল নামক স্থানে ডাকাতী করার প্রস্তুতির সময় পুলিশ তিন সদস্যকে আটক করে। আটককৃতরা হলো ঢাকার সাভার সোনালী ব্যাংক কলোনী এলাকার মৃত জমির খানের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৪২), ঢাকার জুরাইন এলাকার থানার তোফাজ্জল হকের ছেলে খোকন মিয়া ওরফে জামাল মিয়া (৫৫) এবং মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লকান্দি এলাকার আব্দুর রবের ছেলে মোহাম্মদ হারুন ওরফে বাবু মিয়া (৪২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ৪ রাউন্ড গুলি, হাতকড়া, ওয়াকিটকি, বার্মিজ টিপ চাকু, ডেগার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লোগো যুক্ত টি-শার্ট, স্পেশাল সিকিউরিটি কমান্ডোর লোগো যুক্ত টি-শার্ট, বুট, স্বর্ণালংকার, নগদ ৯২ হাজার টাকা, মাদকদ্রব্য ও একটি প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো গ-১৪-৮৫৯৪) উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত জানান, গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই চক্রটি পুলিশ-র্যাব ও সেনা সদস্যদের পরিচয়ে কুষ্টিয়া, যশোর ,ঝিনাইদহ, পাবনা, রাজশাহী , বগুড়া, মানিকগঞ্জ ,বরিশাল, ঢাকাসহ দেশের ২২ টি জেলায় গত তিন মাসে প্রায় শতাধিকেরইও বেশি ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছে। প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রায় দুসপ্তাহ ধরে পুলিশের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এই চক্রের তিন জনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। পুলিশ সুপার জানান, চক্রটি বিশাল। এদের বাকি সদস্যদেরকেও গ্রেফতারের জন্য পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।