কৃষকের কালো সোনার ক্ষেতে ঢলেপরা রোগের হানা

0
64

স্টাফ রিপোর্টার

পরাগায়নের সময় ঢলেপরা রোগে কালো সোনা ক্ষাত কালোজিরা ক্ষেতের গাছ মারা যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পরেছে কৃষকরা। ক্ষেতের গাছ মারা যাওয়ায় অনেকে কৃষক জমির পরিচর্যা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে আশা ছাড়ছেন না বেশির ভাগ চাষী।

খোকসায় উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসূমে উপজেলায় প্রায় ৩শ বিঘা জমিতে কালোজিরা আবাদ হয়েছে। পদ্মা তীরের গোপগ্রাম গ্রাম ইউনিয়নে প্রায় ১২৫ বিঘা ও আমবাড়িয়া ইউনিয়নে প্রায় ৩৫ বিঘা জমিতে কালোজিরার আবাদ বেশি হয়েছে। শুধু গোপগ্রাম ইউনিয়নের রঘুনাথপুর বøকে প্রায় ৭০ বিঘা জমিতে কালোজিরার আবাদ হয়েছে। এই বøকের কৃষক সামেদ আলী ও ইব্রাহীমের প্রায় ১ বিঘা জমির কালোজিরা ঢলেপরা রোগে নষ্ট হয়ে গেছে।

বীজ বপণ থেকে ১২০ দিনে কৃষকের কালো সোনা কলোজিরা ঘরে তোলা যায়। প্রতি বিঘা জমিতে ৭ মণ কালোজিরার ফলন হয়। বর্তমান প্রতি মণ কালোজিরার পাইকারী বাজার মূল্য ১০/১১ হাজার টাকা। গত কয়েক বছর পদ্মা তীরের কৃষকরা কালোজিরার বাম্পার ফলন পেয়েছে। ফলে কালোজিরার, ভুট্টা, সূর্যমুখি, ধুনিয়াসহ চৈতালি ফসলের আবাদ লক্ষনীয় ভাবে বেড়েছে।

রঘুনাথপুর বøকের খদ্দোসাধুয়া গ্রামের কৃষক মাসুদ প্রামানিক। তিন বিঘা জমিতে কালোজিরার আবাদ করেছেন। তার ক্ষেতে ঢলেপরা রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকিতে ইতিমধ্যে কয়েকবার প্রতিশেধক দিয়েছেন। তাতে রোগ কিছুটা কম মনে হচ্ছে। তবে নিমূল হয়নি। এই ফসল নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন। তার পাশের জমির দুই কৃষকের প্রায় ১ বিঘা জমিতে সিংহ ভাগ কালোজিরার গাছ মারা গেছে। যে গুলো বেঁচে আাছে তাতে ভালো ফল পাওয়ার আশা খুবই কম।

কৃষক মাসুদ প্রামানিক বলেন, প্রকৃতি যদি না মারে, তবে কৃষিতেই পয়সা হয়। তিনি নিজেকে কালোজিরার প্রথম আবাদি কৃষক বলে দাবি করেন। তিনি আরও জানান, গত বছর ৪ বিঘা জমিতে কালোজিরা আবাদ করেছিলেন। তাতে ১লাখ ২৫ হাজার টাকার জিরা বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু এ বছর ঢলেপরা রোগের কারণে তিনিও চিন্তায় পরেছেন। তবে আশা ছাড়েন নি। এবছর মাঠে মৌমাছির আনা-গোনা বেশী দেখা যাচ্ছে। পরাগায়ণ ভালো হবে। এ কারণে যা গাছ থাকবে তাতেই লাভ হবে বলে আশা করছেন।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, অনেক নতুন ফসল আবাদ শুরু হয়েছে। নতুন ফসলের সাথে কিছু নতুন নতুন রোগ দেখা দিচ্ছে। তবে প্রতিশেধক দিলে নিরাময় হচ্ছে। বালাই প্রতিরোধ ও নতুন নতুন ফসল আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামশ্য দেওয়া হচ্ছে। তাতে কাজ হচ্ছে। কৃষক ভেদে ও পরিচর্যার উপর ফসলের ফলন নির্ভর করে।

কৃষি অফিসার সবুজ কুমার সাহা বলেন, পদ্মা তীরের দুই ইউনিয়নে সব থেকে বেশি পরিমানের কালোজিরার আবাদ হয়েছে। নতুন ফসল আবাদে কৃষরা ঝুকছে। কালোজিরাসহ ভুট্টা, ধুনিয়ার আবাদ বেড়েছে। কিছু রোগ বালাই থাকবেই। তার জন্য কৃষি বিভাগের কর্মীরা কাজ করছে।