খোকসায় সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

0
91

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসার আমলাবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আদালতে মামলার সূত্রধরে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু ৩ ঘন্টা আগে মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, উপজেলার গোপগ্রাম ইউনিয়নের আমলাবাড়ী মাধ্যমেক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পক্রিয়া শুরু হয় মাস খানেক আগে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন। এ বিষয়টি জানা-জানি হয়ে গেলে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক ছাত্রসহ এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। ইতোমধ্যে নিয়োগ বন্ধ রাখার আদেশ চেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য আত্তাব আলী বাদি হয়ে আদালতে মামলা করেছেন। যার নম্বর দেং ৬১/২৩, তারিখ ১ জুন ২৩ (মামলাটি চলমান)। এক পর্যায়ে ২ জুন তারিখের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। কিন্তু ৩ ঘন্টা আগে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দিয়ে ৬ জুন হঠাৎ নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষককে ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মামলার বাদি আত্তাব আলী জানান, আদালতে মামলা দায়েরের পর ২ জুনের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে নিয়োগ কমিটি। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আদালতের আদেশ অমান্য ৬ জুন সকাল ৯ টায় প্রার্থীদের মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাঠান। এ দিনই জেলা সদরের একটি স্কুলে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহন করেন। ১৮ জন বৈধ আবেদন কারীর মধ্যে নিয়োম রক্ষায় শুধুমাত্র ৪ জন প্রতিযোগী প্রার্থীকে পরীক্ষায় উপস্থিত করা হয়। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নারায়ন চক্রবর্তীকে ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ।

তিনি দাবি করেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি আলমগীর হোসেন ও প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমানসহ ৯ জন বিবাদীর বিরুদ্ধে আদালত ্আদেশ দিয়েছে। কিন্তু সে আদেশ উপেক্ষা করে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি আবারো আদালতে যাবেন।

সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের আদেকারী রেজাউল ইসলাম। প্রথম পরীক্ষার জন্য নোটিশ পেয়েছিলেন। কিন্তু পরের দিন হঠাৎ করে মোবাইলের ম্যাসেজে জানতে পারেন নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অল্প সময়ের জন্য তিনি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন নি।

গোপগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষকের মত একটি গুরুত্ব পূর্ন পদে নিয়োগে অনিয়ম হওয়ার আশঙ্কা থেকে এক সদস্য আদালতে মামলা করেছেন। আদালত নিষেধাজ্ঞাসহ একটা আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুল হকের সাথে যোগসাযোসে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে ছয়-নয় করার অভিযোগে এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ সভা সমাবেশ করেছে। কিন্তু নিয়োগ তো দেওয়া হয়ে গেছে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান স্বীকার করেন আদালতের নিষেধাজ্ঞা আদেশের কথা। তবে তিনি দাবি করেন নিয়োগ দিয়েছেন সভাপতি। তিনি স্বাক্ষর করেছেন। আমিও স্বাক্ষর করেছি।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুল হক বলেন, আদালত স্পষ্ট কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। নিয়োগ বোর্ডের ৯ সদস্যের বিরুদ্ধে শোকজ দিয়ে ছিল। নিয়োগে বাধা নেই; আইনজীবীরা এ বিষয়ে নিশ্চিত করার পর নিয়োগ পক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে নিয়োগের সময় এমন সমস্যা সৃষ্টি হয়ে আসছে। এটিও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, পরে কথা বলবেন বলে জানিয়ে মোবাইল ফোন কেটে দেন।