বরিশালে প্রশাসন-মেয়র সমঝোতা

0
107

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

বরিশালের প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জেলা এবং মহানগর আওয়ামী লীগের মধ্যে সৃষ্ট সংকটের সমাধান হতে চলেছে।

রবিবার রাতে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো: সাইফুল হাসান বাদলের আহ্বানে তার সরকারি বাসভবনে উভয় পরে মধ্যে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, বিরাজমান পরিস্থিতি সমাধানে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন রাজনৈতিক নেতা বলেন, রাত ৯ টার দিকে শুরু হওয়া সমঝোতা বৈঠক চলে রাত ১১টা পর্যন্ত।

সূত্র জানায়, সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, বুধবার রাতের ঘটনার রেশ আর সামনে আগাবে না। আটক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জামিনের বিরোধীতা করা হবে না। প্রশাসনও তাদের মনোভাব থেকে নিজেদের সংযত করবে। এছাড়া গ্রেপ্তার অভিযান বন্ধ রাখা হবে।

মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, প্রক্রিয়াগতভাবে মামলার ফয়সালা হবে। আশা করি প্রশাসনের মামলা দুটি প্রত্যাহার হবে। আর আমাদের তরফ থেকে দায়ের করা মামলার বিষয়ে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব।

এদিকে এ সমঝোতা বৈঠকের পর মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে বরিশাল চেম্বার এবং সিটি কাউন্সিলরদের আহ্বান করা সোমবারের সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।

সভায় অংশ নেওয়া আরেক রাজনৈতিক নেতা বলেন, বরিশালের মঙ্গলের জন্য যা যা করা দরকার আমরা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে তা করেছি।

বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদলের আহ্বানে অনুষ্ঠিত সমঝোতা বৈঠকে বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহসহ রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুছ, মহানগর আ.লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর, সহ-সভাপতি ও প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল ইসলাম লিটু, প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন, ডিআইজি এস এম আখতারুজ্জামান, মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. সাহাব উদ্দীন খান, জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার এবং র‌্যাব ৮ এর অধিনায়ক।

উল্লেখ্য, ১৮ আগস্ট বুধবার রাত ১০টায় সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের পে ১৫ আগস্ট উপলে লাগানো ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করতে যান সিটি করপোরেশনের কর্মী পরিচয়ে একদল যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা। এ সময় অনুমতি ছাড়া সরকারি দপ্তরে প্রবেশে বাধা দেন কর্তব্যরত আনসার সদস্যরার। এক পর্যায়ে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনিবুর রহমান সেখানে উপস্থিত হলে তার সঙ্গে তর্কে জড়ান যুবলীগ ছাত্রলীগের কর্মীরা। এক পর্যায়ে তারা ইউএনওর বাসভবনে ঢুকে হামলার চেষ্টা চালালে আনসরার সদস্যরা গুলি করেন। এ নিয়ে রাত ২টা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।

এ ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলাতেই এক নম্বর আসামি করা হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে।

পরে ২০ আগস্ট এ হামলার ঘটনায় সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায় বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

এদিকে ২১ আগস্ট বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান পরিচ্ছন্নকর্মীরা। দাবি মানা না হলে তারা নগরীর ময়লা-আবর্জনা (বর্জ্য) পরিষ্কার করবেন না বলে হুমকিও দেন।

আর এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনও করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, সংঘর্ষের এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। বিচারে দোষী হলে প্রয়োজনে দলীয় পদ ছেড়ে দেব। কিন্তু দলের তি হতে দেব না।

তবে ২২ আগস্ট এ ঘটনায় সদরের ইউএনও মো. মুনিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দুটি মামলা এবং কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন সিটি করপোরেশন কর্মকর্তা বাবুল হালদার।