ভাঙছে জাতীয় পার্টি, ৯ মার্চ সম্মেলন

0
47
ছবি সংগৃহীত

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

আরো একবার ভাঙতে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। কো-চেয়ারম্যানকে পাশে রেখে ৯ মার্চ দলের সম্মেলনের ঘোষনা দিলেন রওশন এরশাদ।

৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর চলমান অস্থিরতার মধ্যে কাজী ফিরোজ রশীদের পর রবিবার প্রকাশ্যে রওশন এরশাদের প নেন দলটির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। তাকে পাশে বসিয়ে রওশন জানিয়েছেন, ৯ মার্চ দলের সম্মেলন হবে।

রওশনের এ ঘোষণার পর প বদলকারী আবু হোসেন বাবলাকে সব পদ থেকে অব্যহতি দিয়েছেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু রওশনের সম্মেলনকে ‘অন্য দল’ গঠন বলে আখ্যা দিয়ে বলেছেন, কেউ যদি জাতীয় পার্টি নামে আরেকটা দল করতে চান, করতেই পারেন। বাধা দিতে পারি না। দলের বাইরে কেউ ১০টি কমিটি ঘোষণা করলেও তাতে কিছু যায় আসে না।

১৯৮৬ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠার পর অন্তত ছয়বার ভেঙেছে জাপা। বর্তমানে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশ ছাড়াও জেপি (মঞ্জু), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মতিন) নামে আরও তিনটি নিবন্ধিত দল রয়েছে। জাপা (জাফর) নামে আরেকটি অনিবন্ধিত দল সক্রিয় রয়েছে। ৯ মার্চ সম্মেলনের মাধ্যমে রওশনের নেতৃত্বে আরেকটি জাতীয় পার্টির জন্ম হতে যাচ্ছে।

যদিও রবিবার গুলশানের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে রওশন দাবি করেছেন, দল ভাঙছে না। তিনি বলেছেন, জাতীয় পার্টি চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। দলকে ফের সুসংগঠিত করার ল্য নিয়ে আগামী ৯ মার্চ জাতীয় সম্মেলন ডেকেছেন।

গত ২৮ জানুয়ারি নিজেকে জাপার চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন রওশন এরশাদ। একইসঙ্গে জি এম কাদের এবং জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে ‘অব্যহতি দেন’ তিনি। তবে চুন্নু বারবার বলেছেন, রওশন এরশাদের এসব ঘোষণাকে পাত্তা দিচ্ছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে রওশন বলেন, নেতাকর্মীদের দাবিতে দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। কাজী ফিরোজ রশীদ এবং সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ দলের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতৃবৃন্দ এবং এরশাদভক্ত সর্বস্তরের অগণিত নেতা-কর্মীরা পাশে দাঁড়িয়েছেন। সবাই মিলে সুন্দর একটি সম্মেলন উপহার দিয়ে জাতীয় পার্টিতে আবার প্রাণশক্তি ফেরাতে চাই।

এরশাদের জীবদ্দশা থেকে দ্বন্ধ চলছে রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরের। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তা চরমে পৌঁছে। নেতৃত্বের লড়াইয়ে টিকতে না পেরে নির্বাচনে অংশ নেননি গত দুই সংসদের বিরোধীদলের নেতা রওশন। তাঁর অনুসারীদের কাউকেই মনোনয়ন দেয়নি জাপা।

এদিকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জি এম কাদের বিরোধী দলের নেতা হতে পারলেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদে মাত্র ১১টি আসন পেয়েছে জাপা। ভোটের আগে থেকেই লাঙলের প্রার্থীরা অভিযোগ তোলেন, নির্বাচনে অংশ নিয়ে জি এম কাদের সরকারের কাছ থেকে টাকা পেলেও অন্যদের দেননি। তিনি স্ত্রী শেরীফা কাদেরের জন্য আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আসন ছাড় পেতে দলের অন্য নেতাদের বলি দিয়েছেন। জি এম কাদের আওয়ামী লীগকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরাতে রাজি করাতে না পারায় ছাড়ের ২৬ আসনের ১৫টিতে হেরেছেন লাঙলের প্রার্থীরা। ছাড়ের বাইরে যে ৩-৪টি আসনে লাঙলের প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতায় ছিলেন তারা বারবার চেয়েও জি এম কাদেরের সহায়তা পাননি।

এসব অভিযোগ তোলায় কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে অব্যহতি দেন জি এম কাদের। পরে জি এম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে ‘স্বেচ্ছাচারিতার’ অভিযোগ এনে ৬৭১ জন নেতাকর্মী পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

রওশন বলেন, রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র চর্চার প্রধান ত্রে সময় মতো সম্মেলন। জাতীয় পার্টির সম্মেলনের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই সফল সম্মেলনে একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেছি।