মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

0
140
DROHO-11-P12
প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা

দ্রোহ ডেস্ক

সরকারি ব্যয়ে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস যদি আবার ব্যাপক হারে দেখা দেয়, তখন আমাদের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। মানুষকে আবার আমাদের সহযোগিতা করতে হবে, চিকিৎসা করতে হবে, ওষুধ কিনতে হবে। হয়ত আরো ডাক্তার, নার্স আমাদের লাগবে।

সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। ঠিক যেটুকু আমাদের নেহায়েত প্রয়োজন, তার বেশি কোনো পয়সা এখন খরচা করা চলবে না। ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য রেখেই সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।”

রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর কয়েকটি ব্যাটালিয়নকে ‘ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড’ (জাতীয় পতাকা) প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও পদক্ষেপের কথা প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।

মহামারীর মধ্যেও ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই বাজেট দেওয়া কঠিন ছিল। তবুও আমরা দিয়েছি। তারপরও বলেছি যে অর্থ খরচের ব্যাপারে সবাইকে একটু সচেতন থাকতে হবে।”

সাভার সেনানিবাসে এই অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ১,৩,৬,৮ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন, অ্যাডহক ১১ বীর মেকানাইজড ব্যাটালিয়ন, ১২ বীর, ১৩ বীর, ১৫ বীর সাপোর্ট ব্যাটালিয়ন, ৫৯ ইস্ট বেঙ্গল সাপোর্ট ব্যাটালিয়ন এবং স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকসকে (এসআইএন্ডটি)’ ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কমান্ডারদের কাছে জাতীয় পতাকা হস্তান্তর করেন।

সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে দেশপ্রেম ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সেনা কর্মকর্তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী দেশের সম্পদ ও মানুষের ভরসা এবং বিশ্বাসের প্রতীক। কোনো সেনাবাহিনী মানুষের আস্থা, বিশ্বাস যদি অর্জন করতে না পারে, তাহলে কখনো তারা কোনো বিজয় অর্জন করতে পারে না। তাই আপনাদের সকলকে পেশাগতভাবে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ এবং মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হতে হবে। দেশপ্রেম ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখেই আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যে কোনো ইউনিটের জন্য ‘সম্মান ও গৌরবের বিষয়’ মন্তব্য করে পতাকা পাওয়া ইউনিটগুলোর উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, “আপনারা এই গৌরব অর্জন করেছেন। আমি আশা করি, জাতির আস্থা, বিশ্বাস অটুট থাকবে। দেশ সেবায় আপনারা আত্মনিয়োগ করবেন। দেশ মাতৃকার সেবা করাটাই হচ্ছে সব থেকে বেশি গৌরবের। কাজেই আপনারা সেদিকে বিশেষভাবে মনোনিবেশ করবেন।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই পতাকা। এই পতাকা হচ্ছে একটি জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সন্মান ও মর্যাদর প্রতীক। এই পতাকার মান রক্ষা করা প্রত্যেকের দায়িত্ব। প্রতিটি সৈনিক এবং আমি মনে করি সকল জনসাধারণ- সবারই দায়িত্ব এই পতাকার মর্যাদা রক্ষা করা। কারণ এটাই হচ্ছে আমাদের প্রতীক, আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের।”

সশস্ত্র বাহিনীতে নারী সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা তুলে ধরে তাদেরকেও অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।

একটি শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে যে প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেছিলেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার (বঙ্গবন্ধু) সুদূরপ্রসারী এ নির্দেশনার আলোকেই সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের কাজ চলছে।

সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, সরঞ্জাম ও জনবল বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ‘অভূতপূর্ব উন্নতি’ সরকার করে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সেনাবাহিনীতে গত সাড়ে ১১ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করায় সারা বিশ্বে আমাদের সামরিক বাহিনী একটি উন্নত ও আধুনিক বাহিনীর মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।”