হাস্যকর তামাশা কেবলমাত্র শেখ হাসিনার আমলেই সম্ভব : রিজভী

0
81
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

অভিনব ও হাস্যকর তামাশা কেবলমাত্র শেখ হাসিনার আমলেই সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, একটি সংবাদের প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। খিঁচুড়ি রান্না প্রশিক্ষণের জন্য সরকারী কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানো হচ্ছে। ইতোপূর্বে পুকুর খননের প্রশিক্ষণের জন্য সরকারী কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানো হয়েছিল। এছাড়াও পাবদা মাছ চাষের প্রশিক্ষণ নিতে সরকারী কর্মকর্তারা বিদেশে গিয়েছিলেন। এসব অভিনব ও হাস্যকর তামাশা কেবলমাত্র শেখ হাসিনার আমলেই সম্ভব।

মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আবহমানকাল ধরেই উল্লিখিত বিষয়গুলি সাধারণ মানুষের রপ্ত। অথচ সেইসব বিষয়ে সরকারী কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানোতে একটি প্রবাদ মনে পড়ে যায়-‘সরকারী মাল দরিয়া মে ঢাল’। মোটা অংকের বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে ফালতু কাজে সরকারী কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানো মূলতঃ মিডনাইট নির্বাচনে সহায়তা করার জন্য সরকারী কর্মকর্তাদের উপঢৌকন দেয়া। যে সরকারের আমলে একটা বালিশের দাম সাড়ে সাত হাজার টাকা এবং একজন রোগীকে আড়াল করতে সাড়ে সাইত্রিশ লাখ টাকার পর্দা লাগে সেই সরকার যে আগাগোড়াই লুটপাটের চেতনায় অনুপ্রাণিত তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দু’দিন আগে বলেছেন- বিএনপি চিরাচরিত মিথ্যাচার করছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলেছে এই সরকার করোনা রোগীদের পরিসংখ্যানে ৮২ হাজার রোগীর নাম বাদ দিয়েছে’। তিনি বলেছেন ৮২ হাজারের তথ্য কোথায় পেয়েছেন এবং এই তালিকা জানতে চেয়েছেন।

ওবায়দুল কাদের সাহেবের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- বানোয়াট এবং অসত্য কথা বলার ফেরিওয়ালা আপনারা। তিনি আরও বলেন, আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি ১১ সেপ্টেম্বর বহুল প্রচারিত ‘নিউ এজ’ ইংরেজি পত্রিকাটির প্রধান শিরোনাম দেখুন। ৮২ হাজার নয়, ৮৪ হাজার করোনা রোগী সরকারের ডাটাবেজের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ডিজি হেলথ সার্ভিস কি সরকারী নাকি বিরোধী দলীয় প্রতিষ্ঠান? এটি প্রত্যক্ষভাবে একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান। তাদের ডাটাবেজ থেকে ৮৪ হাজার রোগীর নাম হারিয়ে গেল কিভাবে? এই তথ্যটি এমন একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যেটি জনগণের নিকট বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যম।

এই সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে- সরকারী ডাটাবেজে এলাকাভিত্তিক করোনার সংখ্যা ও সংক্রমণের হারেরও তেমন তথ্য নেই। এখন আমি বলতে চাই- উল্লিখিত পত্রিকাটি পাঠ করে ওবায়দুল কাদের সাহেবের নিজের আত্মমর্যাদার কথা চিন্তা করে এই মূহুর্তে পদত্যাগ করা উচিত। জনসম্মুখে ডাহা মিথ্যা উল্লেখ করার পর একজন মন্ত্রীর কোনোক্রমেই দায়িত্বে থাকা তাঁর মর্যাদার সঙ্গে বেমানান।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, সরকার শুরু থেকেই করোনা রোগীর আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। জাতির সামনে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে না। করোনার টেষ্ট কমিয়ে দিয়ে করোনা রোগী নেই বলে জনগণকে ধাপ্পা দিয়ে বিপদের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এই ধাপ্পাবাজির উদ্দেশ্য হচ্ছে করোনা থেকে জনদৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে রাখা।

রিজভী বলেন, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকা দেয়ার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও মিথ্যাচারের যন্ত্র বানিয়েছে সরকার। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে। এখনও আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যার মধ্যে কোনো আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। সরকারী হিসেবে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।

দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যুতেও অনেক দেশ থেকে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশের মানুষের আশংকা এইভাবে চলতে থাকলে এদেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা ভয়াবহ রুপ ধারণ করবে। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। করোনায় মৃত্যুবরণ ও সংক্রমণে হাসপাতাল কিংবা কবরস্থানেও যেন ঠাঁই নেই।

সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আযাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য একরামুল হক বিপ্লব, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা জাহিদুর রহমান, মোরশেদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।