আজ ভয়াল একুশে আগস্ট

0
174
আজ-ভয়াল-একুশে-আগস্ট
সংগৃহিত ছবি

সঞ্জয় বিশ্বাস

২০০৪ সালের এই দিনে, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। দেখতে দেখতে ১৬ বছর শেষ হয়েছে এই নারকীয় হত্যা যজ্ঞের। হরকাতুল জিহাদের (হুজি-বি) একদল জঙ্গির ছয় বছর ধরে আপ্রাণ চেষ্টার চূড়ান্ত রূপ দেখায় এই দিনে। ৭৫ এর পরে ২০০৪ সালের আগস্ট মাসটা আবারো রক্তাত হলো।

এ জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ধারাবাহিক চেষ্টার এক চূড়ান্ত রূপ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ অবধি নৃশংস সহিংসতার যেসব ঘটনা ঘটেছে এ ঘটনা তারমধ্যে অন্যতম।

সেদিন যা ঘটেছিল

২০০৪ সালের ২১ শে আগষ্ট শনিবার। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ আওয়ামী লীগের সমাবেশে মধ্যমনি হয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা। সভাবেশ শুরু হয়েছিল বিকাল ৪ টায়।

সময় তখন সাড়ে ৪টা- বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। বিকাল ৫ টার সময় শেখ হাসিনা সমাবেশস্থলে পৌঁছান। বুলেটপ্রুফ মার্সিডিজ বেঞ্জ জিপ থেকে নেমেই, নিরাপত্তা কর্মী বেষ্টিত অবস্থায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের উপর তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে উঠে বক্তৃতা শুরু করেন।

২০ মিনিটের বক্তৃতা শেষে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার হাতে থাকা একটি কাগজ ভাঁজ করতে করতে এগোচ্ছিলেন মঞ্চ ট্রাক থেকে নামার সিঁড়ির দিকে।

এমন সময় দক্ষিণ দিক থেকে মঞ্চকে লক্ষ্য করে একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। সময় তখন ৫টা ২২ মিনিট। গ্রেনেডটি মঞ্চের পাশেই রাস্তায় পড়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এরপর একে একে আরও ১২টি গ্রেনেড বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটে। স্বল্প সময়ের মধ্যে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। আতঙ্কিত মানুষ ছোটাছুটি শুরু করে। সেদিনের গ্রেনেড হামলায় মঞ্চের নিচে রাস্তার উপরে বসা আইভি রহমানসহ অসংখ্য মানুষ লুটিয়ে পড়েন। তবে ঘাতকদের প্রধান লক্ষ্যই ছিল শেখ হাসিনা।

পরিস্থিতির তাৎপর্য বুঝতে পেরে মঞ্চে উপস্থিত ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ এবং শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী মাহাবুব তাৎক্ষণিকভাবে এক মানবঢাল তৈরি করে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন।

সেদিনের ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন নেতা অল্পের জন্য প্রানে বাঁচলেও নিহত হোন দলের ২৪ জন নেতাকর্মী। এ ছাড়াও এ হামলায় আরও চার শতাধিক মানুষ আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি।

দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাস্থ্য বিধি মেনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।