উপজেলা ক্যাম্পাসে বন বিভাগের গেট ভেঙ্গে পরে শিশু নিহত

0
20

স্টাফ রিপোর্টার

ঘুড়ি ওড়ানোর সময় উপজেলা ক্যাম্পাসে ভিতরে বন বিভাগের গেটের পিলার চাপা পরে জুবায়েদ ইসলাম নামের ৪ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে খোকসা উপজেলা পরিষদের ক্যাম্পাসে বন বিভাগের অফিসের গেটের পিলার ও গেট জুবায়ের ইসলাম (৪) এর গায়ের উপর ভেঙ্গে পরে। আহত শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যায়। ঘুড়ি ওড়ানোয় ব্যস্ত অপর শিশুরা অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে। নিহত শিশুটি মাঠপাড়া গ্রামের হালিম রেজা উজ্জলের ছেলে।

ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছে প্রত্যক্ষদর্শী মায়া

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিশু মাসুম ও মায়া জানায়, তারা ৭/৮ জন শিশু ওই (বন বিভাগের উপজেলা কর্মকর্তার) অফিসের নার্সারির ভিতরে ঘুড়ি ওড়া ছিলো। এ সময় জুবায়ের গেটের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ করে গেটের পশ্চিম পাশের পিলারটি হুরমুর করে শিশুটির গায়ের উপর ভেঙ্গে পরে। এক বৃদ্ধের সহযোগীতা তারা নিজেরা গেটের পিলার চাপা পরা শিশুকে উদ্ধার করে পাশের অফিসে নিয়ে পানি দেয়। পরে অফিসের লোকেরা মোটর সাইকেলে করে আহত শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃতবলে ঘোষনা করেন।

উপজেলা বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনের অকূলস্থলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় ভেঙ্গে পরা গেটের পাশে অসংখ্য নারী পুরুষ জটলা করে দাঁড়িয়ে আছেন। গেটের পিলার ও গেটের একাংশ পড়ে আছে। ভেঙ্গে পরা পিলারের ভিতরের কোন প্রকার রড ব্যবহার করা হয়নি। গেটের অপর পিলারটিও ধাক্কা দিলে নড়ে বেড়াচ্ছে। সেটিও যে কোন সময় ভেঙ্গে পরতে পারে।

নিহত শিশুর চাচা আজিজুল ইসলাম জানান, বন কর্মকর্তার অফিসটি সব সময় অরক্ষিত থাকে। কর্মকর্তাদের খাম খেয়ালি পণায় তার ভাতিজা জুবায়েদের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

বন বিভাগের অফিসের পাশেই উপজেলা সমাজ সেবা কর্মর্কার অফিস। এ বিষয়ে কথা বলা হয় উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা হাসানুজ্জমান বলেন, বন কর্মকর্তার সামনে শিশুদের চিৎকার শুনে তিনি অফিস থেকে বেড়িয়ে আসে। এ সময় শিশুটিকে উদ্ধার করেছে অন্য শিশুরা। এক পর্যায়ে নিজের অফিসের লোক দিয়ে মোটরসাইকেরে করে তিনি শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে পাঠান। শিশুর মৃত্যুর ঘটনাটি দুঃখ জনক বলে মন্তব্য করেন।

তিনি আরও জানান, বন বিভাগের তিনজন কর্মকর্তা কর্মচারী আছেন। মাসের ১/২ তারিখে তাদের দেখা যায়। সব সময় অফিসটি তালা দেওয়া থাকে। ফলে উপজেলা পরিষদের একটি অংশের নিরাপত্তা বিঘিœত হচ্ছে।

উপজেলা বনকর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এক বছরের আগে কুষ্টিয়ার ঠিকাদার গেট নির্মান করেছে। পিলারে মধ্যে রড আছে কি নাই সেটা তার দেখার বিষয় না। তিনি প্রতিদিন নিয়মিত অফিস করেন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত তিনি অফিস করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার ইফ্ফাত জাহান তনুজা বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালে আনার আগে মারা যায়। পিলার চাপা পরায় শিশুটির মাথা ও বুক থেতলে গিয়েছিল। ফলে মাথায রক্তক্ষরণের কারণে শিশুটির মৃত্যু হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এটি একটি দুর্ঘটনা। তার নিজের বাচ্চাও উপজেলা কমপ্লেক্সের মধ্যে খেলাধুলা করে। তার সন্তানও দুর্ঘটনার শিকার হতে পারতো। আসলে গেটটি নির্মান ক্রুটি থাকতে পারে। তিনি নিজে ঘটনা স্থলে গিয়েছিলেন, ঠিকাদার গেটের পিলার এমন ভাবে তৈরী করেছেন। মনে হচ্ছে গেটের পিলার দুটি মাটির উপরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। নাড়ালেই নড়ছে। বন কর্মকর্তার কোন গাফিলতি পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।