করোনায় এন্টিবডি কাজ করে মাত্র কয়েক মাস-গবেষণা

0
103
প্রতিকী ছবি

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের দেহে তৈরি অ্যান্টিবডি পরবর্তীতে তাদের সুরক্ষা দেবে বলে, যে আশার বানী শোনা যাচ্ছিল সর্বত্র। হঠাৎ এ আশার বানীতে জল ঢেলে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের একদল বিজ্ঞানী।

লন্ডনের কিংস কলেজের এই গবেষক দল বলছেন, নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের পরবর্তী সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা টেকে মাত্র কয়েক মাস।

তার মানে এই দাঁড়ায় যে, আক্রান্তরা কয়েক মাস পর আবার আক্রান্ত হতে পারেন। প্রতি বছরই আক্রান্ত হতে পারেন একই ব্যক্তি, যতক্ষণ না পর্যন্ত একটি টিকা আসে। তবে টিকাও তাদের নিশ্চিত সুরক্ষা দেবে কিনা তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছে গবেষকদের।

মানুষের আয়ু বাড়ানোর ওষুধ আবিষ্কারের পথে

করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন এমন ৯০ জনের বেশি মানুষের প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে সাড়া দিচ্ছে তা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার তিন সপ্তাহ পর শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি সবচেয়ে বেশি কার্যকর থাকে এবং তারপর দ্রুত তা কমে যেতে শুরু করে।

‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা জানায়, রক্ত পরীক্ষায় দেখা গেছে, উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকার সময় ৬০ শতাংশ মানুষের দেহে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। কিন্তু সুস্থ হওয়ার তিন মাস পর মাত্র ১৭ শতাংশ মানুষের দেহে সেই অ্যান্টিবডি থাকে।

গবেষক দলের প্রধান ডঃ কেটি ডোরস বলেন, আক্রান্ত হওয়ার পর মানুষের দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে জেতার মত পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই সেটি হ্রাস পেতে থাকে। আপনি কতটা লড়াই করতে পেরেছিলেন তার উপরও অ্যান্টিবডি কতদিন শরীরে স্থায়ী হবে তা নির্ভর করে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ ঠিক কতটা কার্যকর সুরক্ষা দিতে পারবে সে প্রশ্নের সন্ধানে এবং টিকা উন্নয়নের জন্য এ গবেষণা তাৎপর্যপূর্ণ।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নানাভাবে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিন্তু সেই লড়াইয়ের মূল অস্ত্রটি যদি হয় অ্যান্টিবডি তাহলে গবেষণা বলছে, ঋতু পরিবর্তনের সময়কার সর্দি-কাশির মত মানুষ আবার ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে টিকাও হয়ত বেশিদিন সুরক্ষা দিতে পারবে না।

ডঃ ডোরস বলেন, সংক্রমিত হলে মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি রোগ প্রতিরোধে সক্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু যদি সংক্রমিত হওয়ার পর শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি মাত্র দুই থেকে তিন মাস স্থায়ী হয় এবং তারপর হ্রাস পায় তবে টিকা দেওয়া হলেও সম্ভবত একই অবস্থা হবে।

তাই হয়ত মানুষকে নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। আর এক ডোজ টিকা নেওয়াই হয়ত যথেষ্ট হবে না।