কালবৈশাখীতে ৯ জনের মৃত্যু, দুই জেলে নিখোঁজ

0
24

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

ছয় জেলায় কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আরও দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।

রবিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া কালবৈশাখী ও বজ্রপাতে নিহতদের মধ্যে খুলনায় একজন, পটুয়াখালীতে দুইজন, ঝালকাঠিতে তিনজন, বাগেরহাটে একজন, পিরোজপুরে একজন ও নেত্রকোণায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বাউফলে এখনো দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন।

খুলনায় বজ্রপাতে নিজের ঘরে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ওবায়দুল্লাহ গাজীর (৩৫) বাড়ি ডুমুরিয়া উপজেলার কোমলপুর গ্রামে।

গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিন বলেন, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বজ্রপাতের সময় ওবায়দুল তার ঘরে ছিলেন। ঘরের চাল ভেদ করে বজ্রপাতের আঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার একটি গরু মারা যায়।

পটুয়াখালীর বাউফলে কালবৈশাখী ঝড়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও তেতুলিয়া নদীতে নিখোঁজ রয়েছে দুই জেলে। লন্ডভন্ড হয়েগেছে শতাধিক ঘরবাড়ি। বজ্রপাতে মারা গেছে ১০টি গরু। গাছপালা উপড়ে বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

নিহত মোহাম্মদ রাতুল শিকদার (১৫) বাউফলের নাজিরপুর গ্রামের জহির সিকদারের ছেলে। বজ্রপাতে এবং দাসপাড়া ইউনিয়নের চর আলগি এলাকার বৃদ্ধ সাফিয়া বেগম (৮০) গাছ চাপা পড়ে মারা যান।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বশির গাজী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, তেতুলিয়া নদীতে ইব্রাহিম ফরাজী (৪৩) ও ইসমাইল রাঢ়ী (৪০) নিখোঁজ হয়েছেন। তারা দুজনেই চন্দ্রদীপ ইউনিয়নের চর ওয়াডেলের বাসিন্দা।

রবিবার সকালে ঝালকাঠিতে বজ্রপাতে এক স্কুলছাত্রীসহ ৩ নারী নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার উত্তর তালগাছিয়া গ্রামের হেলেনা বেগম (৪০), শেখেরহাট গ্রামের মিনারা বেগম (৩৫) এবং পোনাবালিয়া গ্রামের মাহিয়া আক্তার এসানা (১১)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঝালকাঠির পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, গবাদি পশু ফিরিয়ে আনতে মাঠে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে তারা মারা যান।

বাগেরহাটে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের সময় গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কচুয়া উপজেলা চরসোনাকুড় গ্রামে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বাগেরহাট শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিলবোর্ড ভেঙে যাত্রীবাহী বাসের চালকসহ ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে।

এ দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঝড়ে শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলায় বহু গাছ উপড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকশ কাঁচা ও আধা পাকা বাড়ি। ঝড়ে গাছ পড়ে ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পুরো জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে জেলা সদরসহ অন্যান্য উপজেলাগুলোতে গাছপালা উপড়ে পড়ার পাশাপাশি কিছু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

পিরোজপুরে আকস্মিক ঝড়ে এক নারী নিহত ও বেশ কয়েকজন শিশুসহ ১৪ জন আহত হয়েছেন। রবিবার সকালে পিরোজপুর সদর উপজেলায় কালবৈশাখী আঘাত হানে।

নিহত রুবি বেগম (২২) উপজেলার দক্ষিণ মারিচল গ্রামের মিরাজ সরদারের স্ত্রী। মাত্র ১৫ মিনিট স্থায়ী এই ঝড়ে প্রায় একশ ঘরবাড়ি ও কয়েক হাজার গাছপালা উপড়ে গেছে।

নেত্রকোণায় খালিয়াজুরীর হাওরে বজ্রপাতে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। রবিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপেজলার রাজঘাট হাওরে বজ্রপাতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কৃষক শহীদ মিয়া (৫২) উপজেলার মেন্দীপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে।

খালিয়াজুরী থানার ওসি উত্তম কুমার সাহা জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহত শহীদ মিয়ার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।