খোকসার কালীর বার্ষিক পূজা বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে

0
607

এ বছর ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন মেলা হচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার

বৃহস্পতিবার দিনগত মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার খোকসার ঐতিহ্যবাহী কালীর বার্ষিক পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে করোনা মহামারির কারণে এ বছর গ্রামীন মেলা হচ্ছে না।

অনাদীকাল থেকে প্রতিবছর মাঘি আমবস্যার তিথিতে প্রথাগত জীববলীর মধ্য দিয়ে খোকসার কালীপূজা ও পক্ষকাল ব্যাপী গ্রামীন মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবারও কালীর বার্ষিক পূজা উপলক্ষে বিশালদেহী কালী প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করেছেন স্থানীয় প্রতিমা শিল্পী। এখন চলছে প্রতিমা রং ও অলংকরণের কাজ। জীববলীর জন্য কেনা হয়েছে ক্রোধের প্রতীক মহিষ। নলডাঙ্গার রাজা ও শিলাইদহের জমিদারদের সন্মানে বলীর জন্য কেনা হয়েছে এক জোড়া পাঠা। সব ঠিকঠাক থাকলে পৌনে ৬শ বছরের ঐতিহ্য ঠিক রেখে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের বার্ষিক পূজা শুরুতে করতে সময়ের অপেক্ষা।

রাজা জমিদারী আমল থেকে খোকসার এতিহ্যবাহী কালী পূজা ঘিরে মাসাধিকাল ব্যাপী গ্রামীন মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের বছরও এ পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এ বছর করোনা মহামারির কারণে শুরু থেকে মেলা না করার সিদ্ধান্ত নেয় আয়োজক কমিটি।

প্রতিবছর মাঘি আমবস্যার তিথির কালীর বার্ষিক পূজার একদিন আগে মন্দির চত্বর জন সমুদ্রে পরিনত হয়। মন্দির এলাকায় বসত বাউল মেলা, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পূতুল নাচ, যাদু প্রদশনী, নাগড় দোলা, ঘর গৃহস্থলীর কাজের বেত ও লোহার পন্যেরে দোকান, মিষ্টি ও মনোহরীর ৮ থেকে ৯ শো দোকান। থাকত সিনেমা, সার্কাসসহ বিনোদনের নানা আয়োজন। কিন্তু এবারই ব্যতিক্রম ঘটল।

কালী মন্দির চত্বর এলাকায় জুড়ে বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। বিশাল মাঠের কোথাও কোন দোকানীকে বসতে দেওয়া হয়নি। পূজায় আসা পূর্ণাথীদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রেখে মন্দিরের বিশাল মাঠে আলো ও নিরাপত্তার জন্য সেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে। শেষ মুহুত্যে অনুমতির আশায় মেলায় আসা কয়েকশ দোকানীরা মন্দিরের পেছনের দিকে আশ্রয় নিয়েছে। তবে কমিটি মেলা না করার সিদ্ধান্তে অনড়, করোনার কারণে তারা এ বছর মেলা করবে না।

কালী পূজা মন্দির কমিটির কর্মকর্তা জ্যোর্তিম্ময় পালের সাথে ফোনে কথা বলা হলে তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রভাব পরেছে। এ কারণেই সরকার কোথাও মেলা সার্কাস যাত্রার অনুমতি দিচ্ছেনা। এ সিদ্ধান্তের প্রতি সন্মান দেখিয়ে পূজা কমিটি মেলার অনুমতির চেষ্টা করেনি। তবে মন্দির ও আশে পাশে প্রচুর সংখ্যক পূর্ণাথীদের ভীড় হবে। এ ভীড় ঠেকানো অসম্ভব হয়ে পরবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

খোকসা কালী পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি সুপ্রভাত কুমার মালাকার বলেন, কালীর বার্ষিক পূজার সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন। ইতোমধ্যে পতিমা তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে। এ বছর মন্দিরের প্রধান গেটসহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হয়েছে। আগামীতে মন্দির নির্মানসহ অরো কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, খোকসার কালীর মাঘি আমাবশ্যার প্রথাগত বার্ষিক পূজার সাথে গ্রামীন মেলা অঙ্গা-অঙ্গি ভাবে জড়িত। রাজা জমিদারী আমল থেকে মেলা হয়ে আসছে। শুধু এবছরই ব্যতিক্রম ঘটলো। করোনার কারণে দর্শনার্থীর ভীড় ঠেকাতে মেলার আয়োজন করা হয়নি বলে তিনি জানান।