খোকসার গ্রামের বাড়িতে বৃষ্টির দাফন হবে

0
41

স্টাফ রিপোর্টার

বেইলি রোডের আগুনে মারা যাওয়া নারী সাংবাদিকের ডিএনএ পরীার মাধ্যমে প্রায় দুই সপ্তাহ পরে তার আসল পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। রবিবার রাতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, সাংবাদিক মহলে অভিশ্রæতি শাস্ত্রী হিসাবে পরিচিত হলেও ওই নারী সাংবাদিকের প্রকৃত নাম বৃষ্টি খাতুন। কুষ্টিয়ায় খোকসার গ্রামে জন্ম নেয়া বৃষ্টি খাতুনের বাবা সাবলুল আলম এবং মা বিউটি খানম। তার পরিবারের প থেকে বলা হয়েছে, মরদেহ গ্রামের বাড়ির কবরস্থানে মুসলিম রীতিতেই তার দাফন করা হবে।

তাদের দাবি, এক শ্রেণির অসাধু মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়েছে। দাফন নিয়ে বিতর্কিত কথা লিখছেন। অথচ গ্রামের মানুষ মরদেহ দাফন করতে কোন বাধা দেবে না, তারা সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

সোমবার দুপুরে বেতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বৃষ্টির লাশ হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি আরো জানান, হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ কাফন করে গ্রামের উদ্যেশ্যে রওনা হবেন। রাতেই গ্রামে বৃষ্টির দাফন অনুৃষ্ঠিত হবে।

রাজধানী ঢাকার বেইলী রোর্ডের অগ্নিকান্ডে নিহত বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রæতির লাশ হস্তান্তর হলেও গ্রামের বাড়িতে চলছে সুনশান নিরবতা। বড় বোন বৃষ্টির মৃতদেহের অপেক্ষায় বাড়িতে আছেন ছোট বোন ঝর্ণা। মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে শুনেছেন।

সোমবার দুপুরে খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম পশ্চিম পাড়ায় নিহত ইডেন ছাত্রী ও সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রæতির বাড়ি যাওয়া হয়। তখন ঢাকার শেখ হাসিনার জাতীয় বার্ণ ইউনিটের মর্গ থেকে সবে লাশ হস্তার করা হয়েছে। কিন্তু গোটা বাড়ি জুড়ে সুনশান নিরবতা চলছিল। ঘটনার পর রবিবার (৩ মার্চ) রাতে নিহতের মা বিউটি খাতুন ছোট মেয়ে বর্ষাকে নিয়ে ডিএনএ নমুনা দিতে ঢাকা গেছে। আর ফেরেনি। নিহতের মেজোবোন ঝর্ণা বাড়িতে থাকলেও সে ক্যামেরার সামনে বা সাংবাদিকের সাথে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন। কী বললে কী হয় এই তাদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে।

নিহতের চাচা জোয়াদ আলী জানান, বৃষ্টির বাবা সবুজের সাথে তার সাথে যোগাযোগ করেছেন। ইতোমধ্যে ঢাকাতে লাশ হয়েছে। আমরা এখন মৃতদেহ দাফনের জন্য ব্যবস্থা করব। গ্রামের কবর স্থানেই মৃতদেহ দাফন করা হবে। গ্রামের কেউই বলেনি লাশ দাফন করতে দেওয়া হবে না।

এ সময় কথা বলা হয় বৃষ্টির চাচি সুইটি বেগমের সাথে তিনি জানান, লাশ পাওয়া গেছে তারা এখন কবরের ব্যবস্থা করবে।

ঝর্ণা জানায় বাবা তাকেও একই কথা বলেছে। গ্রামের মানুষতো কোন কথা বলেনি।

বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আব্দুল মজিদ বলেন, বৃষ্টির লাশ দাফনের বিষয়ে কেউই বাধা দেওয়া বা দ্বিমত প্রোশণ করেনি। লাশ পাওয়া গেলে দাফন হবে।

বেতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, নিহতের বাবা সবুজ আলীর সাথে কথা হয়েছে আজ সোমবার দুপুর পরে লাশ হস্তান্তর হয়েছে। এখন গোস করানোর হচ্ছে। লাশ দাফনসহ অন্য কোন কিছুতেই বাধা নেই। তবে এক শ্রেনির অসাধু ফেসবুক ব্যবহার কারী গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনুনর যায়েদ বলেন, বৃষ্টির লাশ পাওয়া গেলে বাধাহীন ভাবে মুসলিম বিধান মাফিক গ্রামে লাশ দাফন করা হবে। মৃতদেহটি গ্রামে পৌছানোর আগে তিনি নিজেই গ্রামে যাবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, তিনি যতটুকু সংবাদ নিয়েছেন তাতে বৃষ্টি খাতুন মুসলমানের মেয়ে। এখন আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মৃতদেহ ফেরত পাওয়া লাগবে। তিনি জেনেছেন নিহতের বাবা শাবলুল আল সবুজ আদালতে আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার পক্ষ থেকে পরিবারকে সব ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছে বলেও জানান।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রæয়ারি)রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকান্ডে মারা যান বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রæতি শাস্ত্রী। তার মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার আঙুলের ছাপ সংরণ করা হয়।