খোকসায় ওএমএস এর চাল আটা বিক্রি

0
109

প্রতিদিনই খালি হাতে ফিরে যায় শয়ে শয়ে মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসায় শেষ রাতে ওএমএস ডিলারের দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছেনা চাল আটা। প্রতি দিনই ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে শয়ে শয়ে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ খালি হাতে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

দ্রব্য মূল্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে তিন জন ওএমএস ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সরকারী ছুটির দিন বাদে সপ্তাহে ৬ দিন প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন ২শ পরিবারের জন্য ১ মেট্রিক টন চাল ও ১ মেট্রিক টন আটা বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। শেষ রাত থেকে এ সব ওএমএস ডিলারের দোকানের সামনে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কয়েশ নারী পুরুষ চাল আটা কিনতে জমায়েত হয়। লাইনের প্রথম দিকে দাঁড়াতে পারলেই জনপ্রতি ৫ কেজি চাল ও আটা মেলে। কিন্তু লাইনের মধ্য অথবা শেষ ভাগে দাঁড়ালে আর চাল মেলে না। চাল আটা না পেয়ে বেশির ভাগ মানুষকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পৌর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে ওএমএস ডিলারের দোকানের সামনে সরেজমিন গিয়ে জন ভোগান্তি দেখা যায়। সকাল সাড়ে নয়টা, তখনো দোকানটি খোলা হয়নি। কিন্তু দোকানটির সামনে নারী পুরুষের দীর্ঘ লাইন। পাশের এক লাইনে কয়েশ ব্যাগ রাখা আছে। খোজ নিয়ে জানা যায়, ব্যাগের মালিকরা বয়সে একটু প্রবীন। ফাল্গুনের সকালে রোদ সইতে না পেরে তারা একটু দূরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পাশে ছাঁয়াই আশ্রয় নিয়েছেন। এক কর্মচারী সাথে নিয়ে ডিলার এলেন, তখন বেলা ১০টা পেরিয়ে গেছে। কিন্তু চাল বিক্রি আরো বিলম্বে হবে। কারন তখনো ট্যাগ অফিসারের নির্দেশ পাওয়া যায়নি। নির্দেশ এলে তখন মিলবে চাল।

পরিবারে জন্য চাল কিনতে আসা ওমর আলী জানান, গত দুই দিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চাল পাননি। আজ (বৃহস্পতিবার) তাই ফজরের নামাজ পড়েই এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। তার আগে আরো ৫০ জন লাইনে দাঁড়িয়ে পরেছে। আজ আশা করছেন তিনি চাল পাবেন। তিনি আরো জানান, প্রতিদিনই শেষ রাত থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে মানুষ খালি হাতে ফেরত যায়।

বয়বৃদ্ধ বিউটি বেগম গত সপ্তাহে দুই দিন খালি হাতে ফিরে যায়ার পর পাশের বাড়ির এক ছেলের সহায়তায় শুধু ৫ কেজি চাল পেয়েছিলেন। এ সপ্তাহে আবার এসেছেন, চাল পাবার আশা ছেড়ে দিয়ে তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন।

ওএমএস ডিলার রফিকুল ইসলাম জানান, প্রত্যেক ডিলারকে প্রতিদিন ২শ জনের জন্য ৫ কেজি চাল এবং সমপরিমান আটা দেয়া হয়। কিন্তু হতদরিদ্র নিন্ম ও মধ্যবিত্তের ৫শ মানুষ লাইনে দাঁড়ায়। ফলে চাল আটা না পেয়ে গড়ে প্রত্যেক ডিলারের দোকান থেকে ২শ থেকে আড়াইশো মানুষ খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ খুবই সামান্য। বরাদ্দ বৃদ্ধি করার প্রয়োজন বলে তিনি দাবি করেন।

খাদ্য বিভাগের ট্যাগ অফিসার ও সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দ্রব্যমূল্যের উদ্ধগতির ফলে প্রতিদিনই ওএমএস এর দোকানের সামনে চাল আটা কিনতে আসার মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। চাল আটা না পেয়ে অনেককেই ফিরে যেতে তিনি দেখেছেন। তিনি আরো জানান, ওএমএস দোকানের চাল আটার মান ভালো হওয়াতে এখন অনেক মাধ্যবিত্তরা লাইনে দাঁড়াচ্ছেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল খালেক বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে খালি হাতে ফিরে যাবার বিষয়টি তার নজরে এসেছে। কিন্তু তার আসলে কিছুই করার নেই। চাহিদা বেড়েছে কিন্তু বরাদ্দ বাড়েনি।