খোকসায় গৃহবধূ খুনের ঘটনায় ভাসুর আটক

0
119
ঘাতক পরকিয়া প্রেমিক বিল্লাল (বামে) নিহত গৃহবধূ পারভীন(ডানে)

পরকিয়া প্রেমিক বিল্লাল আত্মগোপনে

স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ার খোকসার কমলাপুরে নিজের ঘরে খুন হওয়া গৃহবধূর পরকিয়া প্রেমিক বিল্লাল আত্মগোপন করেছে। তবে ওই নারীর স্বামীর বড় ভাই রফিককে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার দিন শেষে সন্ধ্যায় নিজের ঘর থেকে খুন হওয়া গৃহবধূ পারভীন খাতুন (৪০) এর লাশটি উদ্ধার করা হয়। সে পৌর এলাকার ৯ নম্বর য়ার্ডের মোল্লাপাড়ার রইচ মন্ডলের স্ত্রী। দুই সন্তানের জননী।

নিহত গৃহবধূর ভাই হাসনু বাদি হয়ে দুই জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ মামলায় নিহতের ভাসুর (স্বামীর বড় ভাই) রফিকুলকে পুলিশ আটক করেছে। স্বামীর অভিযোগ মিথ্যা আসামী দিয়ে প্রকৃত খুনিকে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে।

নিহতের স্বামী রইচ মন্ডল তার দুই শিশু সন্তান রহিম এবং রহিমা।

নিহতের স্বামীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অন্যান দিনের মত বুধবার সকালে গৃহবধূ পরভীনের স্বামী কাজে বেড়িয়ে যাওয়ার পর পরকিয়া প্রেমিক বিল্লাল হোসেন (টিউবয়েল মিস্ত্রী) গৃহবধূর বাড়িতে আসে। প্রথমেই দুই জনের মধ্যে বাকবিতান্ড হয়। এক পর্যায়ে গৃহবধূ ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের ঘরে গিয়ে দরজা দেয়। বিল্লাল ক্ষুদ্ধ প্রেমিকাকে শান্ত করতে ঘরের বেড়ার ভাঙ্গা অংশ দিয়ে ঘরে ঢোকে। এ সময় গৃহবধূর সপ্তম শ্রেণিতে পড়–য়া ছেলেকে বাড়ির পাশের দোকানে পান কিনতে পাঠায় প্রেমিক বিল্লাল। কিছু সময় পর শিশুটি বাড়ি ফিরলে পরকিয়া প্রেমিক জানায় তার মা ঘুমাচ্ছে। তাকে যেনো না ডাকা হয়। এক পর্যায়ে গৃহবধূর ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখে বিল্লাল দ্রæত বেডিয়ে যায়। সন্ধায় শিশুটি বাড়ি ফিরে মাকে ডাকাডাকি করে। সারা না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহয়তায় ঘরের দরজা খুলে বিছানার উপর তার মায়ের (গৃহবধূর) মৃতদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে রাতেই থানা পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে।

নিহত গৃহবধূর স্কুল পড়–য়া ছেলে রহিম জানায়, বিল্লাল মিস্ত্রী সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাদের বাড়িতে ছিল। প্রথমে তার মায়ের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বিল্লাল তার মায়ের (গৃহবধূ)ঘরে যায়। তার পরে শিশুটির সাথে মায়ের আর দেখা হয়নি। তবে মিস্ত্রী যাওয়ার সময় তাকে জানায় গৃহবধূ পারভীন ঘুমাচ্ছে। তাকে যেনো ডাকা না হয়। সন্ধ্যায় সে বাড়ি ফিরে আসে। মা কে না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘরের দরজা খুলের মায়ের মৃতদেহ দেখতে পায়। শিশুটি জানায়, তার মায়ের গলায় মোবাইল ফোনের চার্জারের তার দিয়ে পেঁচার দাগ ছিল।

নিহত গৃহবধূর স্বামী রইচ মন্ডল জানায়, তার স্ত্রী পারভীনের সাথে বিল্লাল মিস্ত্রীর সম্পর্ক ছিল। এ বিষয়ে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানে। দুই তিন মাস আগে আর স্ত্রী পারভীন আশা সমিতি থেকে ২ লাখ টাকা ঋন তুলে বিল্লাকে দিয়েছিল। এই ঋনের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিরোধের জের ধরে বিল্লাল তার স্ত্রীকে খুন করে ফেলে রেখে যায়। তার স্ত্রীর ভাই হাসনুর দায়ের করা মমলায় আসামী করা নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, শ্বশুর কূলের লোকেরা উদ্যেশ্য মূলক ভাবে তার বড় ভাই রফিককে মামলার ১ নম্বর আসামী করেছে। প্রকৃত খুনিকে আডাল করতে এ মামলা দেয়া হয়েছে। তার দাবি বিল্লালকে আটক করলে খুনের রহস্য বেড়িয়ে আসবে।

স্থানীয় য়ার্ড কাউন্সিলর মেহেদী বিশ্বাস জানান, পরকিয়া প্রেমিক বিল্লাল খুন করতে পারে। স্থানীয়দের রবাত দিয়ে তিনি আরো জানান, নিহত গৃহবধূ সমিতি থেকে ঋন করে পরকিয়া প্রেমিক বিল্লালকে ২ লাখ টাকা দেয়। সেই টাকার কিস্তি পরিশোধ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল বলে শুনেছেন। খুনে ঘটনাটি প্রকাশের কিছু সময় আগে বিল্লাল গৃহবধূও বাড়িতে ছিল। তাকে আটকের পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নিহতের ভাই হাসনু জানায়, পরক্রিয়া প্রেমের কারনে তার বোন খুন হয়েছে। তবে এই হত্যায় বিল্লালকে সহায়তা করেছে তার প্রয়াত বোনের ভাসুর রফিকসহ অন্যরা।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় কয়েক জনের নাম উল্লেখ কওে মামলঅ হয়েছে। প্রধান আসামীকে পুলিশ আটক করেছে। তদন্তে খুনের রহস্য বেড় হবে।