তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা নয়, বিভাজন থাকছে না নবম-দশমে

0
92

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

শিামন্ত্রী দীপু মনি জানালেন আগামী ২০২৫ সাল থেকে পুরোপুরি নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হচ্ছে বলে। আর এ শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কোনো পরীা দিতে হবে না। বিজ্ঞান, মানবিক কিংবা বাণিজ্যের বিভাগ বিভাজন থাকবে না নবম ও দশম শ্রেণিতে।

শিামন্ত্রী দীপু মনি সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন করা হলে তিনি তা অনুমোদন করেন।

২০২৫ সাল থেকে এই শিাক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়নে আগামী বছর থেকে কাজ শুরু হবে। আগামী বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ১০০টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন শিাক্রমের পাইলটিং শুরু হবে। ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

দীপু মনি বলেন, আগামী বছর থেকে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাইলটিং শুরু হবে। ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শুরু হবে নতুন শিক্ষাক্রম । ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণি এবং ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে এই শিাক্রম শুরু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে পুরো শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

জাতীয় শিাক্রম রূপরেখা অনুযায়ী পাবলিক পরীার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীা হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পরীা নিয়ে সেই দুই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল দেয়া হবে। অন্য শ্রেণিতে হবে সমাপনী পরীক্ষা, সমাপনীতে ধারাবাহিক মূল্যায়নের সঙ্গে সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। শিখন সময় কতটা হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি ধারাবাহিক মূল্যায়নেও গুরুত্ব দিয়েছি।

পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা থাকছে কি না- জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, প্রাথমিকে শেষে একটি সনদ পেল, কাস এইট শেষে একটি সনদ পেল। তার মানে না যে প্রত্যেক ক্ষেত্রে সনদ দিতে হবে। আমি যদি কাস শেষ করি সেখানেও তো সনদ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে পারে। সনদের জন্য শিক্ষা নয়, পারদর্শিতা নিশ্চিত করতে চাই। অষ্টম ও প্রাথমিকে পাবলিক পরীক্ষার কথা বলিনি, কাস থ্রি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকবে না এবং প্রতিটিতে সমাপনী পরীক্ষা হবে। সনদ দেওয়ার জন্য পাবলিক পরীক্ষার দরকার নেই। পিইসি এখনও কাস সমাপনী পরীক্ষা, জেএসসি পাবলিক পরীক্ষা, বছর শেষে প্রতিকাসে মূল্যায়ন হবে। দশম, একাদশ ও দ্বাদশে পাবলিক পরীক্ষার কথা বলেছি, এইচএসসির পরীক্ষার রেজাল্ট হবে একাদশ ও দ্বাদশ মিলিয়ে।

প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই রূপরেখা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর আগে প্রাথমিক, মাধ্যমিক আলাদা আলাদা ছিল। একজন শিক্ষার্থী প্রাক-প্রাথমিকে ঢুকে মাধ্যমিকে যাচ্ছে। এ জন্য এক স্তর থেকে আরেক স্তরে যাওয়া যেন খুব মসৃণ হয়, মাঝে যেন ছেদ না পড়ে, অন্য স্তরে গিয়ে যেন খাপ খাওয়াতে কোনো সমস্যা না হয়, সেটি আমরা দেখার চেষ্টা করেছি।

পুরো শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক হবে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, আনন্দময় পড়াশোনা হবে। বিষয়বস্তু ও পাঠ্যপুস্তকের বোঝা ও চাপ কমানো হবে। গভীর শেখনে গুরুত্ব দেয়া হবে। মুখস্ত নির্ভরতার বিষয়টি যেন না থাকে, এর বদলে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শেখাকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। শিাক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে খেলাখুলা ও অন্যান্য কার্যক্রমকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকইে যেন অধিকাংশ পাঠ গ্রহণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি বলেন, এরপর শিক্ষার্থীরা যেন নিজেদের মতো সময় কাটাতে পারে। পড়াশোনার বাইরে খেলাখূলা বা অন্যান্য বিষয়ের সুযোগ কমে গেছে, এটা যেন না হয়। জ্ঞান, দতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।