নতুন এডিপি আসছে দুই লাখ হাজার কোটি টাকার

0
100

 

দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে স্থবির অর্থনীতির চাকা সচল করার ল্েয আগামী অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেট বা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রায় চূড়ান্ত করেছে সরকার। সম্পদের সীমাবদ্ধতার পরিপ্রেেিত নতুন এডিপির আকার খুব একটা বড় হচ্ছে না। তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ঝুঁকি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য খাতে। একই সঙ্গে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষি খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের এডিপির সম্ভাব্য আকার দুই লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা হতে পারে। যা চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি অপো ৯ দশমিক ৬ শতাংশ এবং সংশোধিত এডিপি অপো প্রায় ৬ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের এডিপির আকার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি। জানা গেছে, করোনার কারণে চলমান বেশির ভাগ প্রকল্পের কাজ বন্ধ। ফলে চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার ৬০ শতাংশের বেশি হবে না। এমন বাস্তবতায় আগামী এডিপির কাজ চলছে।

সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত এডিপির মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে এক লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। বাকি ৭০ হাজার ৫০২ কোটি আসবে বিদেশি সহায়তা থেকে। ৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নতুন অর্থবছরের বাজেট নিয়ে বৈঠক করবেন অর্থমন্ত্রী। ওই বৈঠকে বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হবে।

একটি সূত্র জানায়, লকডাউনের সময় আরও বাড়ানো হলে ১১ জুন বাজেট ঘোষণা নাও হতে পারে। ১৫ মের মধ্যে নতুন এডিপির প্রণয়নের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে।

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, করোনা সংকটকালে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের উদ্দেশ্য হবে জনস্বাস্থ্য সংরণ এবং জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। কৃষিপণ্য উৎপাদন বাড়ানো। যোগাযোগ করা হলে পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান বলেন, স্বাস্থ্য খাতে আমাদের দুর্বলতা আছে। করোনার ঝুঁকি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতে আগামী বাজেটে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে কৃষিতেও প্রাধান্য থাকবে। পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন বলেন, একটি বাড়ি একটি খামারসহ প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প, মেগা প্রকল্পে যথারীতি অর্থ বরাদ্দ থাকবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৪৩ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৫ শতাংশ। সূত্র বলছে, সাধারণত অর্থবছরের শেষ তিন মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হয়। কিন্তু করোনার প্রভাবে এবার বাস্তবতা ভিন্ন। ফলে অর্থবছরের বাকি সময়ে চলতি এডিপি বাস্তবায়ন তেমন হবে না। এদিকে ব্যয় সংকোচনের ল্েয কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ ছাড় না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই সব প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ করোনাসহ সরকারের অন্যান্য অগ্রাধিকার কাজে ব্যয় করা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সদস্য ডক্টর শামসুল আলম বলেন, করোনা সংকট মোকাবেলায় অর্থনীতিকে সচল করতে আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ডাক্তার, নার্স টেকনিশিয়ানদের প্রশিণ ও জনবল আরও বৃদ্ধির প্রস্তাব থাকছে। খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে কৃষিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শামসুল আলম মনে করেন, বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র দশমিক ৭ শতাংশ। এটা খুবই কম। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ১ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করার কথা বলা আছে। এখানে আমরা পিছিয়ে আছি।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক গবেষণা পরিচালক, বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডক্টর জায়েদ বখত বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। করোনা নতুন অভিজ্ঞতা। এর প্রভাবে সারাবিশ্বের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লেগেছে। ফলে নতুন করে ভাবতে হবে। ঢেলে সাজাতে হবে স্বাস্থ্য খাতকে। সেভাবে পরিকল্পনা করতে হবে।