পশ্চিম সীমান্তে সোনা আটক বেড়েছে

0
99

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহসহ দেশের পশ্চিম জনপদের সীমান্ত থেকে গত এক বছরে বিপুল পরিমান সোনা আটক করেছে বিজিবি। তারপরও লাগাম টানা যাচ্ছেনা সোনা পাচারের সাথে জড়িতদের। বরং পাচারকারীরা কৌশল বদল করছে।

জানা গেছে, ২০২২ সালে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা সোনার বার আটক করেছে বিজিবি। চলতি ২০২৩ সালের প্রথম দুই মাসে ২৪ টি সোনার বার জব্দ করেছে মহেশপুর ৫৮বিজিবি। যার বর্তমান বাজারমুল্য প্রায় দুুই কোটি টাকা।

বিজিবি সুত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি বিজিবির দুইটি আভিযানিক দল গোপন সুত্রে খবর পেয়ে মহেশপুর উপজেলার পদ্ম পুকুর ডিগ্রী কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪৬৬.৩৮ গ্রাম ওজনের চারটি সোনার বারসহ বহনকারী বায়েজিদকে আটক করে। উদ্ধারকৃত সোনার মুল্য চৌত্রিশ লাখ আটান্ন হাজার টাকা।

গত ১১ ফেব্রæয়ারি মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর সীমান্তে অভিযানে সাড়ে ৯২ লাখ টাকা মুল্যের ১০টি সোনার বারসহ মফিজুর রহমান নামে এক পাচারকারীকে আটক করে বিজিবি। মফিজ যশোরের শার্শা উপজেলার গেড়িপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে।

গত ২০২২ সালের পহেলা এপ্রিল মহেশপুরের করিমপুর গ্রাম থেকে সর্ববৃহৎ সোনার চালান আটক হয়। ওই দিন ৮ কোটি টাকা মুল্যের ৯৯টি সোনার বার জব্দ করে বিজিবি। একই বছরের ফেব্রæয়ারিতে মহেশপুরের নিশ্চিন্তপুর গ্রাম থেকে ১০ টি সোনার বার উদ্ধার করে বিজিবি। যার মুল্য ৭৪ লাখ টাকা। ২৭ এপ্রিল পিপুলবাড়িয়া থেকে ৯টি, গয়াসপুর থেকে ১০ টি ও ২৯ এপ্রিল জুলুলী গ্রাম থেকে ৪০ টি সোনার বার ধরা পড়ে। ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুরহুদা উপজেলার নস্তিপুর সীমান্ত থেকে ৫৮ টি সোনার বার উদ্ধার করে বিজিবি। যারমূল্য ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আটক করা হয় একজন পাচারকারিকে। দিনগত রাতে চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে দর্শনা সীমান্তে যাওয়ার পথে একটি প্রাইভেট কার তল্লাশী করে ৫ টি সোনার বার উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় কামরুল হাসান জুয়েল ও অরিফ হোসেন নামে ২ জনকে। ১৭ সেপ্টেম্বর শার্শার পুটখালী বামুন্ডা সীমান্ত থেকে ২০ টি সোনার বার উদ্ধার করে বিজিবি। হৃদয় হোসেন নামে এক পাচার কারির সপিং ভ্যাগ থেকে সোনার বার গুলো উদ্ধার করা হয়। ২০ সেপ্টেম্বর শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী গোগা বাজারের পাশ থেকে ১৫ টি সোনার বারসহ জসিম উদ্দিন নামে এক পাচারকারিকে আ্টক করে বিজিবি। যার মূল্য ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে বিজিবি চুয়াডাঙ্গার গয়েশপুর সীমান্ত থেকে ভারতে পাচার কালে ৪ টি সোনার বারসহ তাজমুল হোসেন নামে এক পাচারকারিকে আটক করে। ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে শার্শা উপজেলার রুদ্রপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারকালে ১০ টি সোনার বারসহ সাইফুল ইসলাম নামে এক পাচারকারিকে আটক করে বিজিবি। ঐদিন রাতে পুটখালী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার কালে মসজিদ বাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি প্রাইভেট কার থেকে ১ কেজি ৬০ গ্রাম ওজনের সোনার বার উদ্ধার করে বিজিবি।

একই দিন বেনাপোলের মালিপোতা সীমান্ত থেকে ১৮ টি সোনার বার উদ্ধার করে বিজিবি। যার ওজন ২ কেজি ১০০ গ্রাম। বিজিবি’র খুলনা ২১ ব্যাটালিয়নের একটি সুত্র জানায়, গত বছর প্রায় ২৩ কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। বিজিবি’র যশোর ৪৭ ব্যাটালিয়নের সুত্রমতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পাচার কালে ৩৫ কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়।

বিজিবি চুয়াডাঙ্গা ৬ ব্যাটালিয়নের একটি সুত্র জানায়, ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বস্ব পর্যন্ত ১১ কেজি ১৭০ গ্রাম সোনা উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রয়ারি) বিকালে মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ১০ পিচ সোনার বার সহ এক চোরাকারবারীকে আটক করে ৫৮ বিজিবি।

খালিশপুর ৫৮বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ রানা শুক্রবার জানান, বাংলাদেশ থেকে ভারতে সোনা পাচারের জন্য যাদবপুর সীমান্ত পোড়াপারা কাঠ বাজার এলাকায় অবস্থান কর ছিল আব্দুল হাদি নামে এক পাচারকারী। এ সময় তাকে ১ কেজি ১’শ৬৬ গ্রাম ওজনের ১০ টি সোনার বারসহ আটক করা হয়। আব্দুল হাদির বাড়ি যশোর র্শাশা উপজেলার সালকোন গ্রামে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ রানা আরো জানান, সোনাসহ বিভিন্ন পন্যের চোরাচালানরোধে সীমান্তে বিজিবি কঠোর নজদারী বাড়িয়েছে।