কুষ্টিয়ায় পুলিশের সামনেই দরপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হল

0
100
প্রতিকী ছবি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে পুলিশের সামনেই টেন্ডারের দরপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের বিরুদ্ধে। এ সময় সন্ত্রাসীরা ঠিকাদারসহ কয়েকজনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে কুষ্টিয়া পৌরভবনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ঠিকাদার টেন্ডার গ্রহণ প্রক্রিয়া বাতিলসহ পুনরায় টেন্ডার আহবানের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী কয়েকজন ঠিকাদার জানান, কুষ্টিয়া শহর এবং শহরতলীর ১০ টি হাট-বাজার পহেলা বৈশাখ হতে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত এক বছর মেয়াদী টোল আদায়ের লক্ষ্যে ইজারার দরপত্র আহবান করে কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ। ২২ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত দরপত্র বিক্রি করা হয় এবং বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) দুপুর একটা পর্যন্ত সিডিউল জমা প্রদানের সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সকাল থেকেই পৌর ভবনস্থ মেয়রের কার্যালয়ের নিচ তলা এবং দোতালাসহ টেন্ডার বক্সের আশেপাশে পাহারা বসায় ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা। এ সময় ইজারা প্রত্যাশীরা দরপত্র দাখিল করতে গেলে প্রথমে তাদের বাধা দেওয়া হয় এবং জোর পূর্বক দরপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক জনমতামত পত্রিকার সম্পাদক ও ঠিকাদার ইব্রাহিম হোসেন জানান, বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে তিনিসহ কয়েকজন মিলে কুষ্টিয়া পৌর ভবনের দোতলায় মেয়রের কার্যালয়ের সামনে রাখা টেন্ডার বক্সে দরপত্র জমা দিতে গেলে কুষ্টিয়া শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মানব চাকীর নেতৃত্বে ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আফিল উদ্দিন, শহর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসিব কোরাইশী, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফেরদৌস খন্দকার, জুয়েলসহ ২০-২৫ জন ক্যাডার পুলিশের সামনেই তাঁর হাত থেকে জোর পূর্বক সব কয়টি দরপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং পে অর্ডারসহ সমস্ত দরপত্র গুলো ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় তাঁকেসহ তাঁর সাথে থাকে লোকজনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। শুধু ইব্রাহিম হোসেনই নন দরপত্র জমা দিতে যাওয়া আরো কয়েকজনকেও মারপিট করে তাদের দরপত্র ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইব্রাহিম হোসেন দরপত্র প্রক্রিয়া বাতিলসহ পুনরায় দরপত্র আহবানসহ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে শহর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসিব কোরাইশী দাবি করেন তিনি দরপত্র জমা প্রদানের সময় কাউকে বাধা প্রদান করেননি। তারাও একটি দরপত্র জমা প্রদানের জন্য সেখানে গিয়েছিলাম।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, পুলিশের সামনে সন্ত্রাসী কায়দায় টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনা সত্যিই দু:খজনক। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুষ্টিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহিন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কুষ্টিয়া পৌরসভার ইতিহাসে প্রকাশ্যে দরপত্র জমা প্রদানে বাধা প্রদান এবং ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। পৌর বিধি অনুযায়ী এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন খান জানান, সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে তিনি বিষয়টি জেনেছেন। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ বা ভুক্তভোগী কেউ এ ব্যাপারে লিখিত কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।