মামলা নেই তবুও তিন বছর সেফ কাষ্টোডিতে

0
90
ঝিনাইদহ জেলখানায় সেফ কাষ্টোডি (নিরাপদ হেফাজত) রয়েছেন এই প্রতিবন্ধী

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

শুধুমাত্র একটি জিডি’র উপর ভর করে ঝিনাইদহ জেলখানায় সেফ কাষ্টোডি (নিরাপদ হেফাজত) রয়েছেন এক প্রতিবন্ধী। তার নাম, ঠিকানা জন্ম পরিচয় এই তিন বছরেও উদ্ধার হয়নি।

জেলখানায় বন্দী ওই প্রতিবন্ধী পরিচয় সনাক্ত করতে উদ্যোগ নিতে রবিবার আদেশ দিয়েছেন ঝিনাইদহের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বৈজয়ন্ত বিশ্বাস।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই ইউনুস আলী গাজী ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর নগরবাথান এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা ওই মানসিক ও বাক প্রতিবন্ধিকে জনতার হেফাজত থেকে উদ্ধার করে সেফ কাষ্টোডি করার জন্য আদালতে পাঠান। আদালত তাকে সেফ কাষ্টোডিতে ঝিনাইদহে জেলখানায় পাঠান।

৯ মাস পর ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট আদালতের নির্দেশে ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হতে আঙ্গুলের ছাপ গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগে চিঠি পাঠানো হয়। ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ আদালতকে অবগত করে যে, সাধারণ কাগজে সংগৃহীত আঙ্গুলের ছাপ দ্বারা সঠিক পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব নয়। তবে ডিজিটাল ডিভাইজের মাধ্যমে ডাবলুউি.এস.কিউ ফরমেটে আঙ্গুলের ছাপ গ্রহন করা হলে তা সঠিক ভাবে পরীা করা সম্ভব।

ইতোমধ্যে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইয়াছিন আলী ওই প্রতিবন্ধির নাম-ঠিকানা যাচাই সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, অজ্ঞাত ব্যক্তির চেহারা ও অঙ্গভঙ্গি অনেকটা রোহিঙ্গাদের মত।

ঝিনাইদহের জেল সুপার এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করেন অজ্ঞাত ব্যক্তি কারাগারে আসার পর থেকে তার নাম-ঠিকানা বলতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে মামলা নেই। শুধুমাত্র সাধারণ ডায়েরি মূলে তিনি ২ বছর ৮ মাস কারাগারে বন্দী রয়েছেন।

এই অবহতি পত্র পেয়ে ঝিনাইদহ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বৈজয়ন্ত বিশ্বাস ওই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অবিলম্বে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে তার নাম-ঠিকানা উদঘাটন করা প্রয়োজনে একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আদেশ দিয়েছেন। আদেশ প্রাপ্তির ৩ থেকে ১৫ কার্যদিবসের প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।

ঝিনাইদহের মানবাধিকার কর্মী ও সিনিয়র সাংবাদিক আমিনুর রহমান টুকু বলেন, বিনা বিচারে কাউকে জেল হাজতে আটক রাখা ন্যায় বিচার পরিপন্থি। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক কারাগারে আটক ব্যক্তিকে দ্রæত মুক্তির ব্যবস্থা রাষ্ট্রকে করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আরো পড়ুন – কুমারখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় একজন নিহত

ঝিনাইদহের জেল সুপার অনোয়ার হোসেন বলেন, আদালতের নির্দশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে অজ্ঞাত ব্যক্তি জেলখানায় সুস্থ্য আছেন।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডঃ আজিজুর রহমান বলেন, একজন ব্যক্তি বিনা অপরাধে কোন ভাবেই জেলখানায় বন্দি থাকতে পারে না। এটা সভ্য সমাজে অমানবিক।

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস ছালেক বলেন, আদালতের কোন নির্দেশনা এখনো তিনি পাননি। লিখিত নির্দেশনা পেলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা করবেন।