সদ্য নির্মিত মোড়ালটি শ্রদ্ধা নিবেদনের সূচিতে নাই

0
40

স্টাফ রিপোর্টার

জাতির পিতার আবক্ষ ভাস্কর্র্য আছে, আছে ক্ষুদিত অক্ষরে ৭ মার্চের পূর্নাঙ্গ ভাষণ, হানাদারদের হামলায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও সহযেগীদের নাম সম্বলীত মুক্তির মন্ত্র নামের মোড়ালটিতে এবার জাতীয় দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন সূচি থেকে বাদ পরেছে। সামনের দোকান ঘর গুলো অপসারণ না করায় আড়াল পরে গেছে মুড়ালটি। এটির সামনের প্রধান প্রবেশদ্বারে ময়লার ভাগারে পরিণত হয়েছে।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন কৃষি বিভাগের জমিতে ২২-২৩ অর্থ বছরে মোড়াল নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দকৃত প্রায় ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যায়ে ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে মোড়ালটি নির্মান কাজ চলমান রয়েছে। তবে ৭ মাস আগে আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করা হয়েছে। মার্বেল পাথর, সিরামিস ও সাধারন টাইলসে ক্ষুদিত জাতির পিতার আবক্ষ ভাস্কর্যসহ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এবং শহীদ ও সহযোগী শহীদদের নামের তালিকা সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

মুক্তির মন্ত্র মোড়ালটির সামনে পূর্ব দিকে খোকসা-শোমসপুর আঞ্চালিক সড়ক। এই সড়কের গায়ে ১২টি দোকান মোড়ালটিকে আড়াল করে রেখেছে। কয়েক মাস আগে জেলা পরিষদ তার জমি থেকে দোকান ঘর গুলো উচ্ছেদের জন্য দোকানের সামনের দিকে লাল রং দিয়ে ক্রসচিহ্ণ দিয়েছে। কিন্তু ঘর উচ্ছেদের উদ্যোগ চোখে পরেনি। দোকান গুলের পাশ দিয়ে মোড়ালে যাতায়াতে ৮ ফিটের একমাত্র গলি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এখানে পথচারীদের প¯্রাব করতে দেখা যায়। ফলে মোড়ালটি দেখতে হলে ফুড অফিসের রাস্তা ঘরে যেতে হয়।

মোড়ালের সামনে জেলা পরিষদের জমিতে ইজারাদারদের ঘর গুলো রেখেই গত বছরের ৫ আগষ্ট মোড়ালটির আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকি। এর পরে জাতীয় দিবস গুলোতে প্রশাসনিক ভাবে মোড়ালটিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু করা হয়। কিন্তু ১৭ মার্চ হঠাৎ করে এই মোড়ালে শ্রদ্ধা নিবেদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। আসন্ন ২৬ মার্চের সরকারী কর্মসূচিতে সদ্য নির্মিত মুক্তির মন্ত্র মোড়ালে শ্রদ্ধা নিবেদনের তালিকা থেকে বাদ পরেছে।

উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন দৃষ্টি নন্দন মোড়ালটি শ্রদ্ধা নিবেদনের তালিকায় না থাকার ঘটনাটি দৃষ্টিকটু মনে করছেন যুদ্ধকালীন কমন্ডার আব্দুল মালেক। তিনি বলেন, মোড়ালটি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে। এ মোড়ালের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য রয়েছে। এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা উচিত। এই মোড়াল ঘিরে আরও নতুন প্রকল্প গ্রহনের প্রচেষ্টা চলছে। মোড়ালটি অরক্ষিত থাকা ঠিক হচ্ছে না। আবার উপজেলা প্রশাসনের কর্মসূচি থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন হবে না এটা খুব খারাপ দেখাবে।

মোড়ালটির পরিকল্পনাকারী ডঃ আমানুর আমান বলেন, সরকারী বেসরকারী ভাবে জাতীয় দিবস গুলোতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য খচিত মোড়ালে শ্রদ্ধা নিবেদন হবে না এটা ঠিক না। মোড়ালে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ জাতীয় দিবস উদযাপন হবে এটাই বাস্তব।

তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে মুক্তির মন্ত্র মোড়াল ঘিরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লাইব্রেরী ও শহিদ মিনার নির্মানের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ সব প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

মুক্তির মন্ত্র মোড়াল নির্মানের দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ জানান, প্রকল্পটির ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে উদ্ধোধন করা হয়েছে। এর পর আবার নতুন কিছু প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। যে গুলো বাস্তায়নাধীন। মোড়ালের সামনের ঘর অপসারণের ব্যাপারে জেলা পরিষদ লাল রং দিয়ে চিহ্ণ দিয়েছে অচিরেই অপসারণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী ইরুফা সুলতানা বলেন, মিটিং এ আলোচনা করে শ্রদ্ধা নিবেদন সহ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সূচিপত্রে না থাকলেও সবাই মিলে নতুন মোড়ালে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। মোড়ালের সামনে ঘর অপসারনের বিষয়ে তিনিও ধোয়াশার মধ্যে আছেন। এক এক জন একাক কথা বলেন। সিদ্ধান্ত নেবে জেলা পরিষদ।