হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে সড়কের কার্পেটিং

0
132
Daulotpur-Droho-16-p-11
রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাওয়া দেখছে উৎসুক জনতা।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা হোসেনাবাদ-মথুরাপুর সড়ক। ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার এই রাস্তার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯ লাখ ২৭ হাজার ২৭৬ টাকা।

সিডিউল অনুসারে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর কাজটি শুরু হয়ে চলতি বছরের ১২ মার্চ সম্পন্ন হওয়ার কথা। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এখনো রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি।

কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসছে সদ্য নির্মিত রাস্তার কার্পেটিং। বহুল কাংঙ্খিত রাস্তার কাজের মান নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। তবে রাস্তার নির্মাণ কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে উল্টো ঠিকাদারের লোকজনের হুমকির মুখে পড়ছেন স্থানীয়রা।

Daulotpur-Droho-16-p-10
এভাবে উঠে যাচ্ছে রাস্তার কার্পেটিং

সরেজমিনে রাস্তার কাজ পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়ম দেখতে পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দার কাজটি আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা যায়, দৌলতপুর উপজেলায় বেশ কয়েকটি রাস্তার কাজ চলছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে। এর মধ্যের একটি হোসেনাবাদ স’মিল পাড়া থেকে মথুরাপুর গোহাট পর্যন্ত।

সিডিউল অনুসারে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর কাজটি শুরু হয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ১২ মার্চ। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১.৭ কিলোমিটার মিটার এই রাস্তার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯ লাখ ২৭ হাজার ২৭৬ টাকা।

নিম্নমানের ইট, খোয়া, পাথর এবং বিটুমিন দিয়ে রাস্তার নির্মাণ করায় রাস্তা টেকসই হবেনা জেনে এর প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী এলজিইডির নির্বাহী প্রকোশলীর (কুষ্টিয়া) কাছে অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের ভিত্তিতে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দার সোমবার সংশ্লিষ্ট রাস্তার কাজ পরিদশর্নে যান। এ সময় প্রকৌশলীর সঙ্গে থাকা ঠিকাদারের লোকজন প্রতিবাদকারীদের হুমকি দেন বলে তারা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।

স্থানীয়রা বলেন, রাস্তার কাজ এতই নিন্ম মানের হয়েছে যে, হাত দিয়ে টান দিলেই কার্পেটিং উঠে আসছে। তাদের অভিযোগ দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদার বৃষ্টি বাদল কিছু মানছেন না। বৃষ্টির মধ্যেও চলে কার্পেটিংয়ের কাজ। এখনও রাস্তার কাজ শেষই হয়নি, এর মধ্যেই যদি কার্পেটিং উঠে যায় তাহলে অল্প দিনেই রাস্তা আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।

এলাকাবাসী আরও জানান, টিটু এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রভাবশালী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের মাধ্যমে এ রাস্তার কাজ পায়। তবে ওই প্রতিষ্ঠান পরে নাসির উদ্দিন নামে এক ঠিকাদারকে কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোতাছিম বিল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, রাস্তার কাজে অনিয়ম হচ্ছে এটি বেশ কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে। এলাকাবাসী বাধা দিতে গেলে তাদের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দেয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

জানতে চাওয়া হলে ঠিকাদার নাসির উদ্দিন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টিটু এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী টিুটু তার চাচা হন। তারা যৌথভাবেই এ সড়ক নির্মাণের কাজ করছেন। তিনি দাবি করেন দৌলতপুর উপজেলা প্রকৗশলী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ দেখছেন। তাই এখানে অনিয়মের কোনো সুযোগ নাই।

তবে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দার বলেন, রাস্তার কাজে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি নিজে এলাকায় গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে জেলা অফিসে পাঠানো হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

আরও পড়ুন:

করোনা ভাইরাসের প্রথম ওষুধের সন্ধান