দ্রোহ অনলাইন ডেস্ক
তথ্য পাচারের বিষয়ে কর্মকর্তাদের সাবধান করেছেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কর্মকর্তারা কে কোথায় যান, অফিসের তথ্য কোথায় পাচার করেন তা কমিশনের জানা আছে। ইসির গোপনীয়তা বজায় না রেখে উদ্দেশ্যমূলক কাজে জড়িত হলে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন সতর্কবার্তা দেন আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
ইসি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সুন্দর নির্বাচন করা ছাড়া ঘরে ফিরে যেতে পারবেন না। মনে করবেন না, নির্বাচন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের দায়। পক্ষপাতিত্ব করলে নির্বাচন কমিশন কাউকে ছাড় দেবে না বলে হুঁশিয়ার করেন।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, আপনারাও যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো কাজে জড়ান, আপনাদেরও ছাড়া হবে না। আমরা জানি কে কোথায় যান, এই অফিসের তথ্য কে কোথায় পাচার করেন। বাংলাদেশটা খুব ছোট। আপনি কোথায় বসছেন, কার সঙ্গে কী পরামর্শ করছেন, কী তথ্য পাচার করছেন আমাদের কাছে কিন্তু আসে।
সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনারের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি জানান, সচিবালয় থেকে মাঠ প্রশাসন, বিচারাঙ্গন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব সুনামের সঙ্গে শেষ করেছেন। সুতরাং নির্বাচন কমিশনাররা মানসিকভাবে দুর্বল; তারা কম বুঝে তাদের অভিজ্ঞতা কম। তাদের নেটওয়ার্ক কম, তারা জগতের খবর রাখে না।
ইসির কাজের তথ্য পাচার হয়ে গেলে তখন খুব বিব্রতবোধ করেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা খুব বিব্রতবোধ করি, যখন দেখি যে আমরা একটা কাজ করছি, এটার তথ্য চলে যায়। আমি আবার অনুরোধের সঙ্গে সাবধানও করছি, আজ থেকে শপথ নিন। এই কমিশনের মানমর্যাদা রক্ষার প্রয়োজনে গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।
তিনি জানান, কমিটমেন্ট হবে সুন্দর সঠিক নির্বাচন। এর কোনও বিকল্প নেই। এত রক্ত, এত প্রাণ গেল, এত বছরের কষ্ট সঠিক নির্বাচন হলে এগুলো হতো না।
ইসির কোনও ভুলত্রুটি হলে চ্যালেঞ্জ করা ও ধরিয়ে দেওয়ার জন্য অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আপনাদের অনুরোধ করছি— প্রয়োজনে আমাদেরও চ্যালেঞ্জ করবেন, ভুল ধরিয়ে দেবেন। কারণ আপনাদের মধ্যে অনেকেই বাস্তবতা বোঝেন।
এমন এক সময়ে নির্বাচন কমিশন তার কর্মকর্তাদের এমন সতর্কবার্তা দিল, যখন নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। দলটির নেতারা বলছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন দলকানা, একটি পার্টি অফিস এবং তারা একটি দলের পক্ষ হয়ে অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ করছে।
গত রবিবার ইসির শুনানিতে সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সামনে বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানা ও এনসিবি নেতা আতাউল্লাহকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
সেদিন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ নির্বাচন কমিশনে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ নির্বাচন কমিশনকে পেশাদারের ভূমিকায় আমরা দেখতে চাই। নির্বাচন কমিশন যেভাবে দলকানা, একটি দলের প্রতি, একটি দলের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে যেভাবে নির্লজ্জের মত কাজ করছে, আমরা যে নির্বাচনমুখী হচ্ছি, সেটির অন্তরায় বলে আমরা মনে করছি।
এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন, অন্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন – থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হলেন